Hot Posts

6/recent/ticker-posts

বাংলা উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ/মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বাংলা উপন্যাস


(বাংলা উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বাংলা উপন্যাস 

বাংলাদেশের উপন্যাস 

উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ

বাংলা উপন্যাসের ইতিহাস 

বাংলা উপন্যাস 

উপন্যাস) 

**বিঃদ্র-বাংলা বিভাগের সকল পড়াশোনা পেতে ব্লগটিতে যুক্তথাকুন https://monoweredu13.blogspot.com/?m=1 

**বাংলা উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ---

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনেপরিমাণগতপরিবর্তনের সাথে চেতনার ক্ষেত্রেও ঘটেছেগুণগত বিকাশ। স্বাধীনতার সোনালি প্রভায়আমাদের মন আর মননে যে নতুন চেতনা জাগ্রত হয়েছে, উপন্যাসে তার তার প্রতিফলনছিল একান্তই প্রত্যাশিত। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ ঔপন্যাসিক যুদ্ধোত্তর জাতীয় হতাশা এবংঅর্থনৈতিক বিপর্যয়ের শব্দচিত্র অঙ্কনেই হলেন অধিক আগ্রহী, দ্রোহ-বিদ্রোহ-প্রতিবাদপ্রতিরোধ আর উত্তরণের কথাচিত্র নির্মাণে তাঁরা মোটেই উৎসাহী নন। এ কারণেই নঞর্থকজীবভাবনায় বিশ্বাসী কতিপয় ঔপন্যাসিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস নির্মাণ করতে গিয়েওব্যবসায়িক মনোবৃত্তিতে কেবল চিত্রিত করেন পাকিস্তানি ঘাতক সৈন্য কর্তৃক নারী ধর্ষণেরঅনুপুঙ্খ বিবরণ। তবে এ পর্বের উপন্যাসে আবেগ-উচ্ছ্বাস নিয়ে জড়িয়ে আছে সংগ্রাম ওবিজয়ের অবিমিশ্র অভিব্যক্তি, যা একান্তই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকার। যুদ্ধোত্তরসময়ে মূল্যবোধের অবক্ষয়, সর্বব্যাপী হতাশা, নৈরাজ্য এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়েমহৎ শিল্পিমানস অনুসন্ধান করে জীবন ও শিল্পের জন্য সদর্থক এবং আলোকোজ্জ্বল একমানস-ভূমি, কোন কোন ঔপন্যাসিকের রচনায় এ জাতীয় অভিজ্ঞান মুক্তিযুদ্ধোত্তর উপন্যাসসাহিত্যের আশাব্যঞ্জক দিক।। 


মুক্তিযুদ্ধের অনুষঙ্গে শওকত ওসমান লিখেছেন চারটি উপন্যাস – জাহান্নাম হইতেবিদায় (১৯৭১), নেকড়ে অরণ্য (১৯৭৩), দুই সৈনিক (১৯৭৩) এবং জলাঙ্গী (১৯৭৬)।‘দুঃখিনী জননী বাংলাদেশ ও তার বীর সন্তান মুক্তিফৌজদের জন্য' উৎসর্গিত জাহান্নামহইতে বিদায় উপন্যাসে অঙ্কিত হয়েছে একাত্তরে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বর্বরতা,মানুষের অসহায়তা এবং বাঙালির প্রতিবাদ-প্রতিরোধের চিত্র। এ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রপ্রৌঢ় শিক্ষক গাজী রহমান শওকত ওসমানেরই বিবেক যেন। তাঁর নেকড়ে অরণ্য আমাদের

মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রীয় বিষয়ভিত্তিক কোন ঘটনা নয়; এবং এখানে নেই কোন যুদ্ধের ছবি, কোনমুক্তিযোদ্ধার অসীম বীরত্বের কথা কিংবা বিজয়ের উল্লাস – বরং আছে, সমস্ত উপন্যাসজুড়েই আছে, নারী ধর্ষণের স্থূল বিবরণ। যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানি বর্বর সৈন্যদেররিরংসাবৃত্তির শিকার কতিপয় বন্দিনী নারীর জীবন-যন্ত্রণার আলেখ্য এ উপন্যাস। তবেস্রষ্টার সুগভীর জীবনবোধের অভাবে নেকড়ে অরণ্য শেষ পর্যন্ত পরিণত হয়েছে পাকিস্তানিসৈন্যদের নারী ধর্ষণের অনুপুঙ্খ বিবরণে; অভিজ্ঞতাহীনতার কারণেই এখানে ফুটে ওঠেনিবন্দিনী নারীদের জীবনবেদনার গভীরতা। হাজী মখদুম মৃধা নামক জনৈক রাজাকারের

দালালি এবং শেষ পর্যন্ত তার বিপর্যয় নিয়ে গড়েউঠেছে শওকত ওসমানের দুই সৈনিক।যেমন সৈয়দ শামসুল হকের পায়ের আওয়াজ পাওয়াযায় (১৯৭৬) নামক কাব্যনাট্যে,তেমনি শওকত ওসমানের এ উপন্যাসেও, আমরা সীমিত মনোযোগেই লক্ষ করি স্রষ্টারসর্বজ্ঞ-সহানুভূতি বর্ষিত হয়েছে পাক-বাহিনীর দালাল রাজাকার-আলবদরদের ওপর।

জলাঙ্গী উপন্যাসে অঙ্কিত হয়েছে এক ভীরু মুক্তিযোদ্ধার ছবি, যার কাছে যুদ্ধের চেয়ে বড়

হয়ে উঠেছে প্রেম এবং অবশেষে নিহত হয়েছে রাজাকারের হাতে। শওকত ওসমানের কোন

উপন্যাসেই একাত্তরে বাঙালি জাতির রক্তিম উজ্জীবনের ইতিহাস নেই, শরীর থেকে বেরিয়ে

আসা বারুদের গন্ধ নিয়ে কোন মুক্তিযোদ্ধা তাঁর উপন্যাসে নায়ক হতে পারেনি; মুক্তিযুদ্ধের

অনুষঙ্গে তিনি এঁকেছেন কিছু খণ্ডচিত্র মাত্র।


শওকত আলীর যাত্রা (১৯৭৬) উপন্যাসে একাত্তরের পঁচিশে মার্চের কালো রাতে

পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর পাশবিক আক্রমণে ভীত ঢাকা শহরের বিচিত্র শ্রেণীর মানুষ

গ্রামের পথে যাত্রা করেছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। প্রথম অবস্থায় ভয়-ভীতি-দ্বিধা-সংশয়

কাটিয়ে মৃত্তিকা সংলগ্ন সংগ্রামশীল গ্রামীণ মানুষ অচিরেই হয়ে ওঠে এক একজন

মুক্তিযোদ্ধা, তাদের মধ্যে জেগে ওঠে প্রতিরোধের দুর্নিবার সাহস। পাকিস্তানি বাহিনীর

অত্যাচারের অগ্নিকুণ্ডে থেকেও এ উপন্যাসের অধিকাংশ চরিত্র সোনালি ভবিষ্যতের স্বপ্ন

বুনেছে; অধ্যাপক হাসানের সংলাপে ধরা পড়েছে এই আশাবাদ—

"""আশাবাদী না হয়ে যে আমাদের গত্যন্তর নেই।... আমাদের কাছে এখন দুটি মাত্রপর্ব –হয় মৃত্যু নয়তো লড়াই। যেহেতু একটা জাতি মরে যেতে পারে না – সেহেতুতাকে লড়াই করতেই হবে। আর জয়ের আশা না থাকলে কেউ লড়াই করতে পারেনা। যেহেতু আমরা মরে যেতে পারি না সেহেতু আমাদের জয়ী হতেই হবে। এখনআমাদের জীবনের আরেক নাম হয়ে উঠেছে স্বাধীনতা। """

সৈয়দ শামসুল হকের নীল দংশন (১৯৮১) ও নিষিদ্ধ লোবান (১৯৮১) নামকউপন্যাসোপম রচনা দুটি মুক্তিযুদ্ধকালীন বাঙালি জাতিসত্তার সামগ্রিক জাগরণ নয়, বরংএকটি খণ্ডিত পরিচ্ছেদের শব্দরূপ। নিষিদ্ধ লোবান-এ লেখক সংগ্রাম আর বিজয়ের চিত্র নাএঁকে পাকিস্তানি সৈন্যদের রিরংসাবৃত্তির উল্লাস অঙ্কনেই অধিক উৎসাহ দেখিয়েছেন।যুদ্ধোত্তর সময়ের পটভূমিতে রচিত সৈয়দ শামসুল হকের দ্বিতীয় দিনের কাহিনী-তেস্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে এসেছে গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের কথা, এবং এটি অনেকটা পরিণত

সৃষ্টি। উপন্যাসের নায়ক শিক্ষক তাহের এ সত্যে আত্মস্থ হয় যে, মুক্তিসংগ্রাম একাত্তরের

ষোলই ডিসেম্বরই শেষ হয়ে যায়নি, কারণ সমাজে এখনো চলছে অশুভ শক্তির পায়তারা।

তাই তাহেরের আত্মোপলব্ধিতে জ্বলে ওঠে প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষা—

"""সে জানে, মৃতদের ফিরিয়ে আনা অসম্ভব, কিন্তু মৃতের প্রতিশোধ গ্রহণ তো সম্ভবাঘটনা যখন অরণ্যের রীতিতে ঘটে তখন সেই একই রীতিতে তার উপসংহারও টানতেহয়। না, তাহের যেন আর না বলে যে, হত্যা অনুমোদনযোগ্য নয়। আর শুধুপ্রতিশোধই নয়, সঘামের এ-এক আবশ্যিক পর্যায়। সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি, দেশস্বাধীন হয়েছে বলেই দেশ থেকে এক লহমায় অশুভ শক্তিসমূহ অন্তর্হিত হয়নি; এখনোঅস্ত্র ধারণ করবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সম্ভবত আগের চেয়ে, মুক্তিযুদ্ধ চলারসময়ের চেয়ে, এখন প্রয়োজনীয়তা আরো বেশি করে রয়েছে। ""

পৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত সেলিনা হোসেনের (১৯৪৭-) হাঙর নদী গ্রেনেড (১৯৭৬)(উপন্যাসে উঠে এসেছে একাত্তরের গ্রামীণ জীবনের আলোড়ন-সংক্ষোভউপন্যাসের নায়িকা বুড়ি মুক্তিযুদ্ধে উৎসর্গ করেছে প্রাণ-প্রতিম সন্তানকে, এবংএভাবেই সে আত্মকেন্দ্রিক চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে পৌঁছে গেছে জাতীয় মুক্তিসংঘামেরবক্রিমস্রোতে। হলদী গায়ের নিস্তরঙ্গ জীবনধারায় বেড়ে ওঠা বুড়ি মুক্তিযুদ্ধের রক্তস্রোতেঅবগাহন করে হয়ে ওঠে সূর্যপ্রতিম। বুড়ির অপর নাম মুক্তির আকাঙ্ক্ষা–ও যেন হাজারলক্ষ সন্তানহারা গর্বিতা মাতৃভূমির শাশ্বত শিল্প-প্রতিমা। এক রইসের মা থেকে বুড়ির উজ্জ্বলউত্তরণ ঘটে, ও হয়ে যায় লক্ষ রইসের সর্বজনীন মা


""""নিঃসীম বুকের প্রান্তরে হু হু করে বাতাস বয়ে যায়। বুড়ি হাজার চেষ্টা করেও কাঁদতেপারে না। ছুটে বেরুতে গিয়েও দাঁড়িয়ে পড়ে। আরো দুটো প্রাণ ওর হাতের মুঠোয়।ও ইচ্ছে করলেই এখন সে প্রাণ দুটো উপেক্ষা করতে পারে না। বুড়ির সে অধিকারনেই। এখন ওরা হাজার হাজার বলীমের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিচ্ছে। ওরা হলদী গীরস্বাধীনতার জন্যে নিজের জীবনকে উপেক্ষা করে লড়ছে। ওরা আচমকা ফেটে যাওয়াশিমুলের উজ্জ্বল ধবধবে তুলো। বুড়ি এখন ইচ্ছে করলেই শুধু রইসের মা হতে পারেনা। বুড়ি এখন শুধুমাত্র রইসের একলার মা নয়"""। """

যুদ্ধকালীন নাগরিক মধ্যবিত্তের অস্তিত্ব-অনস্তিত্বের সংকট, আশা-নিরাশার সংশয় এবংচেতনাগত অন্তর্দ্বন্দ্ব শব্দরূপ পেয়েছে রশীদ হায়দারের (১৯৪১) খাঁচায় (১৯৭৫)উপন্যাসে। এ উপন্যাসে খাঁচায় বন্দি একটি টিয়ে পাথির মুক্ত হওয়ার প্রতীকী ব্যঞ্জনায়প্রতিভাসিত হয়েছে ঔপনিবেশিক শাসনের শৃংখল থেকে বাংলাদেশের মুক্তির কথা,স্বাধীনতার কথা। আঙ্গিকগত বৈশিষ্ট্যে অভিনব অন্ধ কথামালা (১৯৮২) উপন্যাসে রশীদহায়দার মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রামীণ মানুষের আত্মিক জাগরণ যেমনি তুলে ধরেছেন, তেমনিউপস্থিত করেছেন পাকিস্তানের দালালদের হীন ষড়যন্ত্র ওঅত্যাচারের কাহিনী। টুয়েন্টিনাইন খেলতে খেলতেই গ্রামের একদল যুবক মিলিটারি আসার সংযোগ সেতু উড়িয়েদেয়ার পরিকল্পনা করে, কিন্তু তাদেরই একজনের বিশ্বাসঘাতকতায় তা ব্যর্থ হয়ে যায়; ধরাপড়ে পরিকল্পনার অন্যতম সাথী বেলাল হোসেন। এই বেলাল হোসেনকে যখন বন্দি অবস্থায়চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বধ্যভূমির দিকে, সে-সময়কার তার বিচিত্র অনুভূতি আর

একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত হলেও মাহমুদুল হকের (১৯৪০- ২০০৮) জীবন আমার বোন (১৯৭৬) উপন্যাস লিবিডোতাড়িত ও নিষ্ক্রিয় রোমান্টিকতাআক্রান্ত নাগরিক মধ্যবিত্তের জীবন-যন্ত্রণারই শব্দরূপ; এখানে নেই সাহসে জ্বলেকোন মুক্তিযোদ্ধার কথা, কোন প্রতিরোধের কাহিনী। বাঙালির রক্তিম উজ্জীবনের সময়ওযেহেতু মাহমুদুল হকের নায়ক খোকার ‘পলায়ন ছাড়া কোন ভূমিকা নেই, তাই তারবিকৃত মানসিকতায় অর্ধেন্দু দস্তিদার-প্রীতিলতা আনোয়ারা-মতিয়ুরের বাংলাদেশ হয়ে যায়

‘একটা বাংলামদের বোতল’, ‘সত্তা মদের দোকান’, ‘ছমছমে ঘুটঘুটে বেশ্যালয়', 'লক্ষবছরের বেতো ডাইনী মাসি' ইত্যাদি। ১০ তার অশরীরী এবং মাটির জাহাজে-ও আছেমুক্তিযুদ্ধের অনুষঙ্গ; কিন্তু কোন উপন্যাসেই মাহমুদুল হক মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক চেতনা প্রকাশেপ্রয়াসী নন।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ—এইবিস্তৃত পটভূমিতে বিন্যস্ত আমার যত গ্লানি (১৯৭৩) উপন্যাসে রশীদ করীম বাঙালিজাতিসত্তার সামগ্রিক জাগরণ-উন্মোচনে মোটেই আগ্রহী নন; তাই মুক্তিযুদ্ধের অনুষঙ্গ ধারণকরেও আমার যত গ্লানি পরিণত হয় উত্তম-পুরুষের জবানীতে স্রষ্টার আত্মধিকার এবংব্যক্তিজীবনের গ্লানিময় আলেখ্যে। রাবেয়া খাতুনের (১৯৩৫) ফেরারী সূর্য (১৯৭৪)উপন্যাসের কাহিনী গৃহীত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন নাগরিক জীবন থেকে; এবং এখানে আছেযুদ্ধের কথা, প্রতিরোধের কথা, পশু-শক্তির বর্বরতার কথা। তবে ভাষারীতিএবংআঙ্গিকগত দুর্বলতার কারণে এটি হতে পারেনি উল্লেখযোগ্য কোন শিল্পকর্ম। আমজাদহোসেনের (১৯৪২) অবেলায় অসময় (১৯৭৫) উপন্যাসে পাক-বাহিনীর আক্রমণে ভীত।।প্রেম একটি লাল গোলাপ (১৯৭৮), একালের রূপকথা (১৯৮০) এবং সাধারণ লোকেরকাহিনী (১৯৮১) উপন্যাসত্রয়ে রশীদ করীম মূলত যুদ্ধোত্তর জাতীয় হতাশা ও বিপর্যয়েরশিল্পরূপ নির্মাণ করেছেন; সমাজ-সংলগ্ন ব্যক্তিজীবনের সুস্থ, সুন্দর এবং অথগুরূপ তাঁরকোন উপন্যাসেই প্রতিবিম্বিত হয়নি। তাঁর প্রেম একটি লাল গোলাপ উপন্যাস নাগরিকউচ্চবিত্ত জীবনের জটিলতা ও অবক্ষয়ের চিত্র; আর সাধারণ লোকের কাহিনী হচ্ছে নাগরিকমধ্যবিত্তের নিত্যদিনের পাঁচালি। রশীদ করীমের উপন্যাসের ভাষা ও চরিত্রের কথা বলারভঙ্গি সচেতন পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্বাক্ষরবাহী, এবং তাঁর উপন্যাস সাংগঠনিক দিক দিয়েওস্বাতন্ত্র্যের দাবিদার।

সৈয়দ শামসুল হকের খেলারাম খেলে যা (১৯৭৩) উপন্যাস যৌনতার বিকার,মনোবিকলন এবং অস্বাভাবিক মানসিক-জটিলতার শিল্পরূপ। এ উপন্যাসের নায়ক বাবরনারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে লিবিডোতাড়িত হয়ে, সে যৌনবিকারগ্রস্ত এবং পাতিবুর্জোয়াজীবনদর্শনে আত্মস্থ। বাংলাদেশের এক মফস্বল শহরের বিচিত্রশ্রেণীর মানুষ, তাদেরকুসংস্কার, অস্তিত্বের সংকট, ভবিষ্যৎ স্বপ্নময়তা আর দ্বিধা-সংশয় নিয়ে গড়ে উঠেছে সৈয়দশামসুল হকের দূরত্ব (১৯৮১) উপন্যাস। আধুনিক মানুষের নৈঃসঙ্গ্যবোধ, বহুভুজ জটিলতাএবং মনস্তাত্ত্বিক বিকার উপস্থাপনে সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস বাংলাদেশেরকথাসাহিত্যে অর্জন করেছে স্বতন্ত্র মাত্রা। আঙ্গিক-নির্মিতি, ভাষা ব্যবহার এবং প্রকরণপ্রসাধনে পরীক্ষা-প্রিয় সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস পাঠক-নন্দিত, সুখপাঠ্য এবং সুখদ।

করেছে স্বতন্ত্র মাত্রা।

সরদার জয়েনউদ্দীনেনা শ্রীমতী ক ও খ এবং শ্রীমান তালেব আলি (১৯৭৩) স্বাধীনতাপরবর্তীকালের মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং উপন্যাসের নায়ক শ্রীমান তালের আগীর বিকৃতযৌনাকাঙ্ক্ষা নিয়ে গড়ে উঠেছে। জয়েনউদ্দীনের বিষণ্ন রোদের ঢেউ (১৯৭৫) এ পর্বের

একটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ঔপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে পুর্ববাংলা

-আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত এ উপন্যাস আমাদের রাজনৈতিকঅর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ-সঙ্ঘামের এক শিল্পিত দলিল। ব্যক্তিক সংকট এবংবিচ্ছিন্নতা নয়, বরং এখানে উঠে এসেছে কল্লোলিত চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকে বাঙালিরচৈতন্যের উত্তরণের কথা, উজ্জীবনের কথা।ভাওয়াল পড়ের উপাখ্যান রচয়িতা আবুজাফর শামসুদ্দীন এ পর্বে রচনা করেনমহাকাব্যধর্মী উপন্যাস পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৭৪)। গ্রাম ও নগরের পটে বিস্তৃত এউপন্যাসে, খণ্ড খণ্ড কাহিনীর আধারে অভিব্যঞ্জিত হয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভ থেকেবিংশ শতাব্দীর মধ্য পর্যায় পর্যন্ত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাস। তবেযে কেন্দ্রানুগ শক্তির আকর্ষণে এ জাতীয় উপন্যাসে খণ্ড খণ্ড চিত্র পূর্ণায়ত জীবনবৃত্তে হয়ে ওঠেঅবস্থ–তা পদ্মা মেঘনা যমুনায় দুর্লক্ষ্য। তাঁর প্রপঞ্চ (১৯৮০) আমাদের দেশের পেশাজীবীরাজনীতিবিদদের ভণ্ডামির স্বীকারোক্তিমূলক উপন্যাস। প্রগতিশীল চিন্তা ও চেতনার প্রকাশথাকলেও, আবুজাফর শামসুদ্দীনের কোন উপন্যাসেই নেই প্রকরণ-পরিচর্যা ও আঙ্গিকনির্মিতিতে প্রত্যাশিত প্রযত্নের ছাপ।এ পর্বে প্রকাশিত শওকত ওসমানের পতত্ত্ব পিজুর (১৯৮৩) প্রতীকাশ্রয়ী রচনা।পঙ্গপালের আক্রমণে বিপর্যন্ত অখ্যাত গৌরগ্রাম এখানে স্বদেশের রূপক। পঙ্গপালের হাতথেকে মুক্তির জন্য, বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন গৌরগ্রামের মানুষ অবশেষে সফল হয় 'পঙ্গপালনিশ্চিতকরণ অভিযানে তারা এগিয়ে আসে মশাল হাতে, যেন দীপালি-উৎসব চারদিকে।পঙ্গপাল ধ্বংসের রূপক-চিত্রে শওকত ওসমান জাতিক আন্তর্জাতিক সামাজিক-গঞ্জপালনেরঅনিবার্য ধ্বংসের কথাই উচ্চারণ করেছেন এ উপন্যাসে। বিষয় গৌরবে বিশিষ্ট আহমদ

ছফার (১৯৭৫) এ পর্বের একটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় নিপীড়িত মানুষ দের নিয়ে রচিত হয়েছিল উপন্যাস টী।


"স্বাধীনতা-উত্তরকালে যেসব নতুন ঔপন্যাসিকের আবির্ভাব ঘটেছে রিজিয়া রহমান(১৯৩৯-) তাঁদের অন্যতম। বিষয়-বৈচিত্র্যে এবং শৈল্পিক-উৎকর্মে তাঁর উপন্যাসসমূহ বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে অর্জন করেছে স্বতন্ত্র মাত্রা। রিজিয়া রহমানের উপন্যাসেরতালিকাটি এ-রকম—ঘর ভাঙ্গা ঘর (১৯৭৪), উত্তর পুরুষ (১৯৭৭), রক্তের অক্ষর (১৯৭৮),বা থেকে ভালো (১৯৭৮), অরণ্যের কাছে (১৯৭৯), শিলায়শিলায় আগুন (১৯৮০), অলিখিত(১৯৮০), ধবল জ্যোৎস্না (১৯৮১), সূর্য সবুজ রক্ত (১৯৮১) এবং একাল চিরকাল(১৯৮৪)। তাঁর ঘর ভাঙ্গা ঘর বস্তি জীবনের ক্লেদাক্ত যন্ত্রণার শব্দরূপ; আর রক্তের অক্ষরহচ্ছে নিষিদ্ধ গল্পীর যন্ত্রণাদগ্ধ প্রাত্যহিকতার ভাষাচিত্র। চট্টগ্রামে হার্মাদ জলদস্যুর অত্যাচারএবং পর্তুগীজ ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিনতা দিয়ে গড়ে উঠেছে রিজিয়া রহমানের উত্তর পুরুষ।বাংলাদেশের পর্তুগীজ ব্যবসায়ীদের অত্যাচার এবং প্রতিষ্ঠাচিত্রণ-সূত্রে এ উপন্যাসে ফুটেউঠেছে আরাকান রাজ সন্দ-সুধর্মার অত্যাচারের কাহিনী, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারেরবীরত্বের কথা, পর্তুগীজদের গোয়া-হুগলী-চট্টগ্রাম দখলের ইতিহাস। এ উপন্যাসেরব্যতিক্রমী চরিত্র বনি, যে পর্তুগীজ নাগরিক হয়েও, বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্বদেশ হিসেবেগ্রহণ করেছে, ভালোবেসেছে এদেশের শ্যামল প্রকৃতি আর শ্যামল মানুষকে এবং ভিতরে

ভিতরে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে পর্তুগীজ অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে।বং থেকে বাংলা উপন্যাসে রিজিয়া রহমান বাঙালির ইতিহাস-সন্ধানী এবং একই সঙ্গেসমকালস্পর্শী। শ্রম-অধ্যবসায় ইতিহাসজ্ঞান এবং শিল্প-চেতনার আস্তরমিলনে রং থেকেবাংলা উপন্যাস বাংলা কথাসাহিত্যের এক উজ্জ্বল শিল্পকর্ম। সেলিনা হোসেনেরও যাত্রা শুরু মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর কালে এবং ইতোমধ্যে তিনি লিখেছেনএ সব উপন্যাস: জলোচ্ছ্বাস (১৯৭২), জ্যোত্স্নায় সূর্যভালা (১৯৭৩) হাঙর নদী গ্রেনেড(১৯৭৬), মগ্ন চৈতনো শিস (১৯৭৯), যাপিত জীবন (১৯৮১), নীল ময়ূরের যৌবন (১৯৮৩),এবং চাদবেনে (১৯৮৪)। বিষয়-গৌরবে সেলিনা হোসেনের প্রতিটি উপন্যাসই স্বাতন্ত্র্যেরস্বাক্ষরবাহী। দক্ষিণবাংলার চর-জীবনভিত্তিক জলোচ্ছ্বাস উপন্যাসে লোকমানসের সঙ্গেস্রষ্টার সুগভীর সংযোগ অভিব্যঞ্জিত হয়েছে। জ্যোৎস্নায় সূর্যজ্বালা উপন্যাস নাগিরক-ক্লেদআর অবক্ষয়ী জীবন-যন্ত্রণা থেকে মুক্তির অভিলাষী গ্রামীণ স্নিগ্ধতায় বেড়ে ওঠা বস্তিবাসীএক নারীর আপন উৎসে প্রত্যাবর্তনের শব্দচিত্র। তাঁর মগ্ন চৈতন্যে শিস নৈঃসঙ্গ্যপীড়িত এবংস্মৃতিভারাক্রান্ত আধুনিক মানুষের অন্তর্ময় ভাবনার শব্দরূপ; তা রোমান্টিক মধ্যবিত্তের গীতলপ্রেম-উপাখ্যান। একজন মিতুলকে না-পাবার বেদনায় উপন্যাসের নায়ক জামেরী এখানেহারিয়ে যায় অসীম নৈঃসঙ্গ্য আর অতলান্ত শূন্যতায়।বিষয়-গৌরবে বিশিষ্ট সেলিনা হোসেনের যাপিত জীবন। ১৯৪৭-এর দেশ-বিভাগথেকে শুরু করে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংক্ষুব্ধ সময়ের পটভূমিতে রচিত এউপন্যাসে ঘটনার দ্বৈত স্রোতধারায় বিন্যস্ত হয়েছে সমাজ-সত্য এবং ব্যক্তি-সংবেদনা। এইউপন্যাসের বিস্তৃত ক্যানভাসে ভাষা আন্দোলনের প্রাক-পটভূমি ও বাঙালিজাতিরআত্মজাগরণ অভিব্যঞ্জিত হয়েছে। প্রেম আর সংঘামের দ্বৈরথে নায়ক জাফর রক্তাক্ত হয়েছেএবং অবশেষে নতুন ভোরের প্রত্যাশায় সংগ্রামের স্রোতে মিলে গেছে। নীল ময়ূরের যৌবনউপন্যাসে ধরা পড়েছে সেলিনা হোসেনের ঐতিহ্যপ্রীতি। এ উপন্যাসে তিনি বিচরণ করেছেনহাজার বছর পূর্বের চর্যাগীতির উঠানে। ইতিহাসনিষ্ঠা সমাজ-সচেতনতা এবং গভীরঅন্তর্দৃষ্টির অঙ্গীকারে রচিত এ উপন্যাস হাজার বছর পূর্বের বাংলাদেশ আর বাঙালি জাতিরএক শিল্পিত দলিল।


স্বাধীনতা-উত্তরকালের আরেকজন প্রতিশ্রুতিশীল ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ(১৯৪৮-)। তাঁর উপন্যাসগুলো হচ্ছে—নন্দিত নরকে (১৯৭২), শঙ্খনীল কারাগার(১৯৭৩), তোমাদের জন্য ভালোবাসা (১৯৮৩), অচিনপুর (১৯৭৪), নির্বাসন (১৯৭৪),শ্যামল ছায়া (১৯৭৩), অন্যদিন (১৯৮৪), সৌরভ (১৯৮৪), তোমাকে (১৯৮৪) এবং ফেরা(১৯৮৪)। একদা নন্দিত নরকে এবং শঙ্খনীল কারাগার লিখে তিনি ব্যাপকআলোচিতহয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীকালে, তিনি আত্মসমর্পণ করলেন সহজ ফুলেল জনপ্রিয়তার কাছেএবং লিখে ফেললেন উপন্যাসের অভিধায় একগুচ্ছ বড়গল্প। সোমেন চন্দের (১৯২০-১৯৪২)বিখ্যাত ‘ইঁদুর’ গল্পের অনুপ্রেরণায় তিনি রচনা করেন নন্দিত নরকে এবং শঙ্খনীলকাগার—এমন স্বীকারোক্তি শঙ্খনীল কারাগার-এর ভূমিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। ৪ কিন্তুসোমেন চন্দের গল্পে সুগভীর এবং মীমাংসিত সমাজবাদী চেতনা হুমায়ুন আহমেদেরউপন্যাসে অভিব্যঞ্জিত হয়নি। যুদ্ধোত্তর সময়ে বিপর্যস্ত মূল্যবোধে আচ্ছন্ন 'নরক' আর'কারাগার' থেকে হুমায়ুন আহমেদ মুক্তির অভিলাষী; কিন্তু ঐ 'নরক' আর কারাগার থেকেএলো না তাঁর আকাঙ্ক্ষিত মুক্তি—বরং ‘নন্দিত’ আর ‘শঙ্খনীল' বিশেষণের আবরণে মেনে

নেন তিনি স্বেচ্ছাবন্দিত্ব। আমরা জানি, উপন্যাসের অন্বিষ্ট পূর্ণায়ত জীবন, কিন্তু হুমায়ুনআহমেদের পরবর্তী উপন্যাসসমূহে সেই পরিপূর্ণ অখণ্ড জীবন-উপলব্ধি নেই। যেমন হুমায়ুনআহমেদ জনপ্রিয়তার কাছে সমর্পিত হয়ে লিখছেন একগুচ্ছ বড়গল্প; তেমনি আরেকজনঔপন্যাসিক ইমদাদুল হক মিলনও (১৯৫৫-) উপন্যাসেরঅভিধায় লিখেছেন বেশ কিছুবড়গল্প এবং এখানেও জীবনজিজ্ঞাসা খণ্ডিত ও বয়োসন্ধি-স্নিগ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর কালে, এছাড়াও আরো কয়েকজন নতুন ঔপন্যাসিকের আগমন ঘটেছে, যারা বিষয়ভাবনা এবংআঙ্গিক-নির্মিতির প্রশ্নে পরীক্ষাপ্রবণ এবং স্বাতন্ত্র্য অর্জনপ্রয়াসী; তবু তাঁদের সম্পর্কেচূড়ান্তভাবে কিছু বলার এখনো সময় হয়নি।


তথ্যনির্দেশ


সৈয়দ আকরম হোসেন বাংলাদেশের উপন্যাস চেতনাপ্রবাহ ও শিল্প-িসাহিত্য পত্রিকা (সম্পাদক প্রফেসর নীলিমা ইব্রাহিম), সপ্তদশ বর্ষ; দ্বিতীয় সংখ্যা (শীত

(১৩৮০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, পৃ. ১৬

মোহাম্মদ নজিবর রহমান আনোয়ারা, ১৯১৪, ত্রয়োদশ মুদ্রণ-১৩৮১, ঢাকা, পৃ. ২৪২

কাজী ইমদাদুল হক : আবদুল্লাহ্, ১৯৩৩, ৪র্থ সংস্করণ-১৯৬২, ঢাকা, পৃ. ২৫২

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর : নদীবক্ষে উপন্যাসের প্রথমে মুদ্রিত।

8

আনোয়ার পাশা : সাহিত্যশিল্পী আবুল ফজল, ১৯৬৭, চট্টগ্রাম, পৃ. ৬৬

উদ্ধৃত — আবুল ফজল রচনাবলী (প্রথম খণ্ড), ১৩৮২; চট্টগ্রাম, পৃ. ১৬৩-৬৪

সৈয়দ আকরম হোসেন, পূর্বোক্ত, পৃ. ১

আবুল ফজল : প্রদীপ ও পতঙ্গ, আবুল ফজল রচনাবলী, পূর্বোক্ত, পৃ. ১৭৮মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান : 'পূর্ব পাকিস্তানী কথা-সাহিত্য, আধুনিক বাংলা সাহিত্য, ১৯৬২,

বাংলা একাডেমী, ঢাকা, পৃ. ১৩৬১১ জননী ১৯৬১ সালে প্রকাশিত হলেও, এ উপন্যাসটি লিখিত হয়েছে চল্লিশের

দিকে, দ্রষ্টব্য—'মুখবন্ধ।১২ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ লালসালু, ১৯৪৮: ষষ্ঠ সংস্করণ ১৯৬৭, ঢাকা, পৃ. ৩০

দশকের প্রথম

১৩ লেখক পরবর্তীকালে উপন্যাসটির নাম রাখেন দুই মহল।

১৪ হাসান আজিজুল হক : 'পূর্ব পাকিস্তানের কথাসাহিত্যে চিন্তার সংকট' পরিক্রম (সম্পাদক ন

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও রফিকুল ইসলাম) তৃতীয় বর্ষ : নবম সংখ্যা, সেপ্টেম্বর, ১৯৬৪,

ঢাকা, পৃ. ৪৯৯

১৫ শওকত ওসমান: সমাগম, ১৩৭৪ ঢাকা, পৃ. ১৪৫-৪৬

১৬ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ কাঁদো নদী কাঁদো, ১৯৬৮, ঢাকা, পৃ. ২৪৪-৪৫

১৭ সৈয়দ আবদাম হোসেন : ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর উপন্যাস', শব্দরূপ (সম্পাদক : সৈয়দ হাফসা

আলমগীর), তারিখবিহীন, ঢাকা, পৃ. ১৭

মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান : পূর্বোক্ত পৃ. ১৩৮-৩৯সরদার অয়েনউদ্দীন: অনেক সূর্যের আশা, ১৯৬৭, চট্টগ্রাম, পৃ. ৩৪৭

20ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যতিক্রম আলাউদ্দিন আল-আজাদের ক্ষুধা ও আশা এবং

কর্ণফুলী।

২) হাসান হাফির বহমান আমাদের সাহিত্য বিভ্রান্তি কান্তি, সমকাল সম্পাদক ও

নিকানুদার আবু জাফর), মাঠ বর্ষ দশম সংখ্যা, ১৩৭০, পৃ.

চন্দ্র সরকার, "পাকানোর পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা উপন্যাসেরখাবা", বাংলা একাডেমী পত্রিকা (সম্পাদক কাজী দীন মুহম্মদ), একাদশ বা প্রথম সংখ্যা,

বৈশাখ-আষাঢ় ১৩৭৪, পৃ. ২

আলাউদ্দিন আল-আজাদ। শিল্পীর সাধনা, ১৯৫৮, চতুর্থ সঙ্করণ-১৯৭৪, ঢাকা, পৃ. ৮

২৩ সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা উপন্যাসের কালান্তর, পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত তৃতীয় সঙ্করণ,

জানুয়ারি ১৯৭৬, কলকাতা, পৃ. ৩৯২-৯৩

২৪ সৈয়দ শামসুল হক সীমানা ছাড়িয়ে, ১৯৬৪, ঢাকা, পৃ.

২৫ ষ্টা: 'সারেং বৌ'-এর প্রথম সংস্করণের পিছনের মলাটে মুদ্রিত পরিচিতি। তবে এ প্রসঙ্গে

উল্লেখ করা প্রয়োজন, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের (১৯১০-১৯৭৬) সারেং জীবনভিত্তিক

ছোটার, ‘সারেঙ’ প্রকাশিত হয় ১৯৪৫ সালে। 'অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের স্ব-নির্বাচিত পদ্মা

(১৩৬১, কলকাতা) গ্রন্থে গল্পটি সংকলিত হয়েছে।

২৬ শহীদুল্লা কায়সার : সারেং বৌ, ১৯৬২, তৃতীয় সংস্করণ-১৯৬৮,

২৭ শহীদুল্লা কায়সার : সংশপ্তক, ১৯৬৫, ঢাকা, পৃ. ৫৩৬

 মনসুর মুসা : পূর্ব বাঙলার উপন্যাস, ১৯৭৪, ঢাকা, পৃ.

সত্যেন সেন: পুরুষমেধ, ১৯৬৯, ঢাকা, দ্রষ্টব্য-‘অবতরণিকা'।

এ প্রসঙ্গে পাপের সন্তান উপন্যাসের ভূমিকায় লেখকের ভাষ্য:

পপের সন্তানকে আমার অভিশপ্ত নগরী উপন্যাসের দ্বিতীয় খণ্ড বলা চলে। এই দুটি

উপন্যাসের ঘটনা-কালের ব্যবধান অর্ধ-শতাব্দীর কিছু উপর।

৩১ অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় কালের প্রতিমা, ১৯৭৪, কলকাতা, পৃ. ৩১৫

৩২ জহির রায়হান আর কতদিন, ১৯৭০, ঢাকা, পৃ. ৪৭-৪৮

৩০ জহির রায়হান: আরেক ফাল্গুন, ১৯৬৯, পৃ. ৬৮

এ প্রসঙ্গে দ্রষ্টব্য : ওয়াকিল আহমদ : আনোয়ার পাশার জীবনকথা', মুনীর চৌধুরী

মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী আনোয়ার পাশা (সম্পাদক : আকরম হোসেন), ১৯৭২, বাংলা

বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, পৃ. ১১১-১৪

৩৫ সৈয়দ আলী আহসান : দ্রষ্টব্য– নোঙর উপন্যাসের ভূমিকা।

৩৬ হাসান হাফিজুর রহমান : ‘দুটো পুরস্কারপ্রাপ্ত উপন্যাস', সাহিত্য-প্রসঙ্গ, ১৯৭৩, দ্বিতীয়

প্রকাশ ১৯৮৭, ঢাকা, পৃ. ৭৪

৩৭ আনিসুজ্জামান: 'ইতিহাস ও উপন্যাস', পরিক্রম (সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও

রফিকুল ইসলাম), তৃতীয় বর্ষ : তৃতীয় সংখ্যা, ডিসেম্বর ১৯৬৩, পৃ. ২৬৬

মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান: 'আমাদের উপন্যাস প্রসঙ্গে' : উত্তরাধিকার সম্পাদক : ডক্টর

মযহারুল ইসলাম) শহীদ দিবস সংখ্যা—১৯৭৪; দ্বিতীয় বর্ষ : প্রথম-তৃতীয় সংখ্যা, বাংলা

কাডেমী, ঢাকা।

আনোয়ার পাশা রাইফেল রোটি আওরাত, ১৯৭৩, ঢাকা, পৃ. ২২

শওকত আলী যাত্রা, ১৯৭৬, চট্টগ্রাম, পৃ. ৯১

ঢাকা, পৃ. ১৪৭

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ