Hot Posts

6/recent/ticker-posts

ইনতেজার হুসেইন এর ছোট গল্পের পিডিএফ ডাউনলোড

ইনতেজার হুসেইন এর পরিচয় ও তার গল্পের পিডিএফ 

##ইনতেজার হুসেইন এর ছোট গল্পের বিষয়বস্তুু....---

জাভেদ হুসেন


ইনতেজার হুসেইন কে? এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া একটু ঝামেলার ব্যাপার। কারণ ইনতেজার হুসেইন নিজে সারা জীবন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে গেছেন। সেই উত্তর তৈরি করার চেষ্টাই হচ্ছে তাঁর ছোট গল্প, উপন্যাস আর পত্রিকার জন্য লেখা প্রবন্ধ । অমীমাংসিত এই প্রশ্নের জবাব ভারতবর্ষ আর প্রতিটা উপনিবেশ পরবর্তী জনগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সমান রকম প্রযোজ্য। জাতি, ধর্ম তথা গাইডেড সংস্কৃতি দিয়ে তাকে এরকম সবগুলো রাষ্ট্রই সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে। যা আমাদের ইতিহাসে নেই, তাকেই যখন আমাদের বর্তমানের পরিচয় বানাই, তখন নিজের ইতিহাস নিজের কাছে গোলকধাধা মনে হয়। ইনতেজার হুসেইন এই ধাঁধা চিনতে পেরেছিলেন। এর ফলে ১৯৪০এর দশকের ভারতবর্ষে বড় হয়ে ওঠা এই সাহিত্যিক প্রগতিশীল লেখক সঙ্ঘের প্রবল বলয়ে ঘনিষ্ঠ থেকেও তাদের ধারায় সরাসরি দীক্ষা নেননি। কিন্তু যে খোঁজ তিনি করলেন, সেটা লেখক সঙ্ঘের বর্তমানকে এর অতীতের সঙ্গে জুড়ে দেয়ার কাজটি করেছে।

ভারতবর্ষের ইতিহাস ভুলে যাওয়ার ইতিহাস। এই ইতিহাস ঘটে যাওয়া ঘটনার সামনে নিজেকে খুঁজে না পেয়ে কখনো ঘটনা আর কখনো নিজেকে অস্বীকারের বয়ান। ইনতেজার হুসেইনকে নিয়ে কথা বলতে গেলে উপমহাদেশের ইতিহাস এড়িয়েযাওয়ার কোনো উপায় নেই। স্বাধীনতা, ১৯৪৭র দেশভাগ, রাজনীতি আর ধর্মের বিভীষিকা কাউকে বাদ দেয়া যাবে না। ঘটমান রাজনীতির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত বয়ান স্বৈরশাসকের ভূমিকা নেয়। তার দাবি থাকে কাউকে মহিমান্বিত করার, অজস্র জটিল ঘটমানতাকে সরলীকরণ করার। লেখক এবং পাঠক সাবধান না হলে সেই দাবির কাছে জিম্মি হয়ে যেতে হয় । ইনতেজার হুসেইন এই দাবির কাছে সমর্পিত হননি । দেশভাগের পর বর্তমানের মাঝে অচেতন হয়ে থাকা অতীতকে নিয়ে প্রশ্ন আর উত্তরের অন্বেষণ, যা বদলে গেছে আর যা বদলে যায়নি তা চিনে নেয়ার তীক্ষ্ণ চোখ আর যদি অতীত একটু ভিন্ন রকম হতো তাহলে বর্তমান কেমন হতো- এই অন্বেষণ একই সঙ্গে আজকের বর্তমান সম্ভাব্য কেমন ভবিষ্যতের রূপ নিতে পারে সেই প্রশ্নের আকার দেয়ার জন্য জরুরি তালাশ বলে মনে করতেন ইনতেজার হুসেইন। তার গল্প আর উপন্যাসের চরিত্ররা...........

ইনতেজার হুসেইন এর ছোট গল্পের পিডিএফ ডাউনলোড করুন

সবাই ইতিহাস আর রাজনীতির মাঝে বেঁচে থাকে, কিন্তু তারা সেই ইতিহাসের বহাল বয়ানের দাস হতে অস্বীকার করে ।

রেডিও, টেলিভিশনের খবর আর আলাপচারিতা, মিছিলের শ্লোগানের পাশে থাকে নদীতে মাছ ধরে থাকা জেলে, থাকে বাজারের কোণে মাথা নুইয়ে থাকা ভিখেছি, কারখানায় পুড়ে মরা একমাত্র অবলম্বন সন্তানের ফুটপাথের পাশে বিড়বিড় করে কাঁদতে থাকা বৃদ্ধা, থাকে চায়ের দোকানের গুজব আর গল্প, প্রতিবেশী গৃহিণীদের বিকেলের অস্ত্র হীন আলাপচারিতা। রাজনীতির সঙ্গে গুজব, ঘটনার সঙ্গে গল্প আর ক্ষণস্থায়ী স্মৃতির সঙ্গে লোকগাথা- এত ইতিহাস সৃষ্টির এক অনস্বীকার্য প্রক্রিয়া। কোনো একাডেমি তাকে ধারণ করতে পারে না, কোনো বহাল বয়ান তাকে আটকে ফেলে প্রকাশ করতে পারে না। সেই বয়ানকে প্রকাশ করার কাজ সারা জীবন চালু রেখে গেছেন ইনতেজার হুসেইন।

আধুনিক উর্দু কথা সাহিত্য বিকাশে ছোটগল্প যে ভূমিকা পালন করেছে, সেই দায়িত্ব পালন করার কথা উপন্যাসের। সেই দায়িত্ব হচ্ছে একটি জনগোষ্ঠীর বয়ান হাজির করা। উর্দুর প্রথম আধুনিক উপন্যাস হচ্ছে ১৮৯৯ সালে ছাপা 'উমরাও জান আদা। এর পর প্রায় অর্ধ শতাব্দী আর কোনো উল্লেখযোগ্য উপন্যাস লেখা হয়নি । এই শূন্যতার জায়গায় কেন্দ্রে উঠে আসে উর্দু ছোট গল্প। সমাজকে নতুন সময়ের ছাঁচে ফেলা, সংস্কার, ঔপনিবেশিক আধুনিকতা, সদ্য জেগে উঠা জাতিবোধের ধারণা- এই সব কিছুকে সফলভাবে ধারণ করল উর্দু ছোটগল্প। মুনশি প্রেমচন্দ (১৮৮০-১৯৩৬) উর্দু বাস্তবভিত্তিক ছোটগল্পের যে ভিত তৈরি করলেন সেই ধারায় কৃশন চন্দর, ইসমত চুগতাই, সাদাত হাসান মান্টো, রাজেন্দর সিং বেদি। তারা এই ধারার সম্ভাবনা পূর্ণ বিকাশ ঘটিয়েছিলেন। তাঁরাই এক হয়ে ১৯৩০র দশকে প্রগতিশীল লেখক সঙ্গের প্রতিষ্ঠা করলেন। তাঁরা জের দিলেন সাহিত্যের সামাজিক ভূমিকার ওপর। একা একা লিখে যাওয়া লেখকদের প্রথমবারের মতো কোনো ভাবনা একত্রিত করতে পেরেছিল এই প্রক্রিয়ায়। হাওয়াই রোমান্স আর ফ্যান্টাসি হতে উর্দু সাহিত্যকে তাঁরা নতুন এক সম্ভাবনার দিকে নিয়ে গেলেন । ইনতেজার হুসেইন সেই কালেই বেড়ে উঠেছেন ।

প্রাথমিক উর্দু ফিকশন গড়ে উঠেছে গদ্য রোমান্সের আদলে যাকে বলা হতো 'দাসতান'। এর বাস্তবের সঙ্গে যোগ ঘটার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে পশ্চিম হতে, মোপাসা, চেখভ, মম, ছিল আদি বাস্তবনির্ভর উর্দু ছোটগল্পের অনুপ্রেরণা। এই ধারার পরবর্তী সংযোগ হচ্ছেন ইনতেজার হুসেইন।

অবিভক্ত ভারতের উত্তর প্রদেশের আলীগড়ের দিবাই গ্রামে জন্ম ইনতেজার হুসেইনের ১৯২৩ সালে। ধূসর, নিদ্রালু সেই গ্রামে তাঁর ছেলেবেলা কাটে। পশ্চিমা শিক্ষার কুপ্রভাব থেকে বাঁচাতে বাবা বেশ কিছুদিন তাকে ঘরেই পড়ালেখা করালেন। শিখলেন আরবি, ফার্সি আর মাঝে মধ্যে উর্দু বই পড়ার সুযোগ হতো। এক সাক্ষাৎকারে তিনি ছেলেবেলার কথা বলছেন:


“ছেলেবেলায় আমি গ্রামের পাশে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতাম একা । কখনো আম, জাম কখনো তেঁতুল পেড়ে সময় কাটত। গ্রামের প্রতিটা গাছ নিয়ে একটা করে গল্প থাকত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ