Hot Posts

6/recent/ticker-posts

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর কাব্য ভাবনা

 বাংলা কাব্যের ভূবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবির্ভাব এক বিস্ময়কর ব্যাপার। বাংলা ভাষার পক্ষে, বাংলা সাহিত্যের পক্ষে বাঙালি। পক্ষে, এমন গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা আর কখনা ঘটেনি। শুধু বাংলা নয়, পৃথিবীতে তার অনুভূতি সৃষ্টির ক্ষেত্রে  এক অনুপম বৈশিষ্ট্য নিয়ে উজ্জ্বল হয়ে আছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য-সৃষ্টি দেশ, কাল ও পাত্রের সংকীর্ণ গণ্ডি। অতিক্রম করে এ সর্বজনীন রূপ ধারণ করেছে ও বিশ্বসাহিত্য সভায় অপরূপ সৌন্দর্যে বিকশিত হয়ে আছে। রবীন্দ্রনাথ কেবল। একজন শ্রেষ্ঠ কবিই নন, কিংবাশুধু ভাষা-সাধকই নন, তিনি একজন চিন্তাবিদ ও দার্শনিক হিসেবেও খ্যাত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন মনুষত্বের সাধক।

আধুনিক বাংলা কাব্যে রবীন্দ্রনাথ :-

ৰাংলা কাৰ্য-সাহিত্যে বাঙালি মনীষার এক অভূতপূর্ব আশ্চর্য প্রকাশ কবিগুরু রবীন্দ্র ঠাকু তার বিচিত্র ভাব, ভাষা ও বিষয়বস্তুর গভীরতার জন্য তিনি যেমন অনবদ্য তেমনি সত্য, সুন্দর ও কলা এই নারী বিশ্বজনীন বােেধর ওপরেই -তা সমগ্র সৃষ্টিকর্ম প্রতিষ্ঠিত। বস্তুত যুগসন্ধিক্ষণের কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (১৮১১-১৮৫১) তার কবিতার । মধ্যযুগীয় পরামাত্রার মধ্যেই আধুনিকতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন কিন্তু বাংলা কাব্য-সাহিত্যে আধুনিকতার ছায়া লাগে মহাকবি মাইকেল মধুসূদনের হাতে। তিনি মেঘনাদবধ কাব্যের মধ্য দিয়ে বাংলা কাব্যে পাশ্চাত্যের মহাকাব্য রচনার ধারা প্রবর্তন করেন। তাদেরের পাখি বলে আখ্যায়িত বিহারীলাল চক্রবর্তী আধুনিক বাংলা কাব্যে ইউরাতে পীর রায়। মান্টিক বৈশিষ্ট্য প্রতিষ্ঠা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিহারীলাল চক্রবর্তী দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। পরবর্তীকালে তারই হাতে বাংলা কবিতা পরম সার্থকতা লাভ করে ।। রবীন্দ্রনাথ তার রামোন্টিক বৈশিষ্টোর আলােেক স্বকীয় ভাবনাপ্রসূত দর্শনের সমন্বয়ে গভীর জীবনচেতনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। রবীন্দ্র যা একাধারে জীবনদেবতার' দুয়ে আচ্ছন্ন রহস্যে আশ্রয়, অন্যদিকে

দৈনন্দিন জীবন ও পারিপার্বিক আবেগ-অনুভূতি। সমৃদ্ধ। এভাবে রবীন্দ্রনাথ বাংলা কালো একটি স্বতন্ত্র ও সমৃদ্ধ সম্মাহেনক্ষেত্র তৈরি করেন, ফলে তাঁর সমকালেই কবির মধ্যে উল্লেখযাগ্যো বলেন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, যতীন্দ্রমাহেন বাগচী প্রমুখ । ধীরে ঠাকুর পরিবারের সৃষ্টিশীল পরিমণ্ডলেই রবীন্দ্রনাথের কাব্যচর্চা শুরু। বাসের কাচ নতন বউঠান কাদম্বরী দেবী তাকে দিতেন ঘোষণা। হিন্দুমেলা', 'गान ान করেন। ১৩ বছর বয়সে তত্ত্ববা-ে গিনী পত্রিকার প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কবিতা । এবার কবিভাগে লাগে সৃষ্টির পুবালি যাওয়া কত ওঠে তাঁর মনের সাজি। তারপর তিনি লিখলেন বনফুলা। প্রকাশিত কলাে কবি-কাহিনী" । ১৩ বছর থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত তার রচিত কবিতা সম্ভার নিয়ে বের হয় শৈশব সংগতি। এই ছিল রবীন্দ্রনাথের উত্তর কালের দেশখা প্রতি পূর্ব


সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের কাব্য  সংখ্যা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিভা বিভিন্ন ও বহুমুখী বলেও তাঁর প্রধান পরিচয় তিনি একজন কবি। তার কবি কাহিনী' (১৮৭৮), বনফুল' (১৮৮০) ও তাকদয় (১৮৮১) কাব্য তিনটিতে বিহারীলালের প্রভাব সুস্পষ্ট। সন্ধ্যাসংগীত (১৮৮২) কাব্যগ্রন্থ থেকে প্রকাশিত হতে থাকে কবি রবীন্দ্রনাথের নিজের বাণী । এই পর্বের সন্ধ্যাসংগীত', 'প্রভাতসংগীত' (১৮৮৩), ছবি ও গান। (১৮৮৪) কাব্যগ্রন্থের মূল বিষয়বস্তু ছিল মানবহৃদয়ের বিষন্নতা, আনন্দ, মর্ত্যপ্রীতি ও মানবপ্রেম। ১৮৯০ সালে প্রকাশিত 'মানসী' এবং তার পর প্রকাশিত 'সানোর তরী' (১৮৯৪), “চিত্রা (১৮৯৬), চৈতালি (১৮৯৬), 'কল্পনা' (১৯০০) ও 'ক্ষণিকা' (১৯০০) কাব্যগ্রন্থসমূহে ফুটে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের প্রেম ও সৌন্দর্য সম্পর্কিত রাতে মান্টিক ভাবনা। ১৯০১ সালে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার পর রবীন্দ্রনাথের কবিতায় আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। এই চিন্তাধারা পড়েছে। নৈবেদ্য' (১৯০১), 'খেয়া' (১৯০৬), গীতাঞ্জলি (১৯১০), গীতমাল্য (১৯১৪) ও গীতালি (১৯১৪) কাব্যগ্রন্থে । ১৯১৪ সালে শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। এ পরিস্থিতিতে রবীন্দ্রনাথ অধ্যাত্মলাকের পরিবর্তে পুনরায় মর্ত্যলােেকর দিকে ধাবিত হলেন । এই নবদৃষ্টির ফসল বলাকা (১৯১৬)। এরপর 'পলাতকা (১৯১৮) কাব্যে গল্প কবিতার আকারে তিনি নারীজীবনের সামসময়িক সমস্যাগুলা েতুলে ধরেন। এরপর 'পূরবী' (১৯২৫) ও 'মহুয়া' (১৯২৯) কাব্যে কবি আবার ফিরে আসেন প্রেমের আশ্রয়ে। কবি জীবনের শেষ দশকে কবিতার আঙ্গিক ও বিষয়বস্তু নিয়ে কয়েকটি নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। প্রথমে প্রকাশিত হয় 'পুনশ্চ' (১৯৩২), 'শেষ সপ্তক' (১৯৩৫), পরাপুট' (১৯৩৬) ও শ্যামলী' (১৯৩৬) নামে চারটি গদ্যকাব্য। এরপর জীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে। 'রাগেশয্যা' (১৯৪০), আরাগো' (১৯৪১), জন্মদিনে (১৯৪১) ও 'শেষ লেখা' (১৯৪১) (মৃত্যুর পরে প্রকাশিত) কাব্যে মৃত্যু ও মর্ত্যপ্রীতিকে তিনি একটি নতুন আঙ্গিকে পরিস্ফুট করেছিলেন। কবির শেষ কবিতা 'তামোর সৃষ্টির পথ' মৃত্যুর আট দিন আগে মৌখিকভাবে রচনা করেছিলেন।


রবীন্দ্র কাব্যের বৈশিষ্ট্য : 

রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা ভিন্ন শ্রেণির। বিশ্বমুখিতা ও সর্বজনীনতা তার প্রতিভার বৈশিষ্ট্য। দেশ, জাতি ও যুগের উর্ধ্বে

যে সর্বজনীন ভাব, যে বিশ্বজনীন আদর্শ, যে চিরন্তন নীতি ও শাশ্বত সত্য, তারই ওপর রবীন্দ্রনাথের কাবা প্রতিষ্ঠিত। দেশ-জাতি-কালের ঐতিহ্য ও সংস্কারকে তিনি ততখানি গ্রহণ করেছেন, যতটুকু তাঁর সর্বজনীন আদর্শ ও নীতির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির সংকীর্ণ ধর্মসংস্কার, যুক্তিহীন সমাজব্যবস্থার প্রতি রবীন্দ্রনাথের অভক্তি ছিল না। মনুষ্যত্বের সর্বজনীন মহান আদর্শ ও উচ্চ-নীতির কষ্টিপাথরে তিনি দেশ ও জাতির ভাবাদর্শ ও সংস্কার প্রথাকে বিচার করে গ্রহণ করেছেন। তিনি খণ্ডকে বিচ্ছিন্নকে এড়িয়ে পরিপূর্ণতার দিকে, অনন্তের দিকে সর্বদা অগ্রসর হয়েছেন। কোনা েএকটি বিশিষ্ট দেশ, জাতি ও সংস্কার-নিরপেক্ষ যে চিরন্তন সভা ও আদর্শ, তাই তিনি অনুসরণ করেছেন তাঁর কাব্য প্রচেষ্টায় যুগ-প্রভাব তাঁর কবিচিত্তে আঘাত করে অনুভূতি ও আবেশে রূপান্তরিত হয়ে কোনা েকোনা েসময়ে অভিব্যক্ত হয়েছে বটে কিন্তু ওই যুগ সমস্যার মধ্যেই তাঁর কাব্যসৃষ্টি নিঃশেষ হয়ে যায়নি যুগের মধ্য দিয়ে যুগাতীত অবস্থায় উন্নীত হয়েছে, যেখানে সর্বকালের সর্বমানবের সমস্যা রূপ পরিগ্রহন করেছে।


কালা সাধনা ও নোবেল পুরস্কার লাভ ১৮৮২ সালে কলকাতা ১০নং সদর স্ট্রিটে অবস্থানকালে রবীন্দ্রনাথ 'নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ কবিতাটি রচনা করেন। এটি তাঁর সমগ্র সৃষ্টিকর্মের ইঙ্গিতবাহী কবিতা। ১৮৮৩ সালের দিকে তিনি পিতার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ এবং পাবনার শাহাজাদপুরে জমিদারি দেখাশুনার দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। কলকাতার বাইরে পল্লিপ্রকৃতি ও তৃণমূল সংলগ্ন মানুষের মাঝে এসে তাঁর সৃষ্টিকর্ম নতুন সমৃদ্ধি লাভ করে। মানসী', 'সানোর তরী', 'চিত্রা' প্রভৃতি বিখ্যাত কাব্য তিনি এ সময়েই রচনা করেন তাঁর লেখা চলতে থাকে বিরামহীন ১৯১১ সালের ৭ মে রবীন্দ্রনাথের বয়স ৫০ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষ্যে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক কবিকে দেশবাসীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। নিজের অনুবাদ করা এবং ইংরেজ কবি ডব্লিউ, বি, ইয়েটস-এর ভূমিকা লেখা “গীতাঞ্জলি প্রকাশিত হলে ন্দ্রনাথ নাবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের কারণে তিনি ইংরেজদের দেওয়া নাইট (Knight) উপাধি প্রত্যাখ্যান করেন।


রবীন্দ্রনাথের 'মানসী' কাব্যে প্রেমের স্বরূপ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রায় প্রতিটি কারোই প্রেম বিষয়টি পরিলক্ষিত হয় মানসী' তাঁর। প্রথম ক এ কারণে কাব্যটি উল্লেখযাগ্যে। মানসী' কাব্যে নর-নারীর প্রেমের স্বরূপ অভিব্যক্ত হয়েছে। যে প্রেম। বুি দেহের চারপাশে ঘুরে মরে, ব্যক্তি মানুষের বাস্তব দেহ-মন যার ভিত্তি, সেই আবেগময় আত্মহারা, সাধারণ মানুষের প্রেমরারে প্রেন "নিষ্ফল কামনা' কবিতাটিতে রবীন্দ্রনাথের কল্পিত প্রেমের রূপটি সম্পূর্ণভাবে উন্মাটিত হয়েছে। প্রেম অम च আশ্বার সম্পন, দেহের সীমার তাকে ধরা যায় না। প্রেমপাত্র নারীর নয়ন হতে আত্মার' রহস্যশিখা'র বিচ্ছুরণ দেখা যায়। সেই অমৃত, সেই স্বর্গের অসীম রহস্য কে কৰি দেহের মাঝে খুঁজে না পেয়ে অতৃপ্ত আকাক্ষার বেদনায় রয়েছে। সেই অনির্বচনী প্রেম-ধনের অধিকারী যে না দঙ্গের মধ্যে পাওয়া কৰি সমগ্ৰ মানৰ কে পেতে চাওয়া সোহম বলে মনে করছেন কৰ


লও তার মধুর সৌরত


দেখায় তার সৌন্দর্যাধিকাশ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ