Hot Posts

6/recent/ticker-posts

ওয়েটিং ফর গডো নাটক আলোচনা /এর বিষয়বস্তু ও চরিত্র



স্যামুয়েল বেকেট এর "ওয়েটিং ফর গডো"ঃ-


নোবেল বিজয়ী লেখক স্যামুয়েল বেকেট এর লেখা অন্যতম একটি নাটক হলো,,  ওয়েটিং ফর গডো(waiting for godot)। নাটকটিতে লেখক চিরাচরিত প্রথা ভেঙে, চিন্তা কে নতুন করে গড়ার কথা বলেছেন। সমসাময়িক চিন্তা বা মননের বাহিরে গিয়ে, তিনি তার চিন্তার জগৎ কে নতুন করে সাজিয়েছেন। মানুষ জন্মগত ভাবে সামাজিক জীব। সমাজ পরিবার এবং আশেপাশের বিসয়বস্তুকে নিয়ে বেচে থাকেন।আর যে কারনে মানুষ সমাজবদ্ধ হয়েছেন, সেটি যখন তাঁদের প্রাপ্তি হয়েছে, তখন সমাজ,রাষ্ট্র অসংখ্য বেড়াজালে  আবদ্ধ করার তাড়নায় ব্যকুল হয়ে পড়েছেন।হয়তো ব্যক্তিগত স্বার্থে কিংবা ক্ষমতার রোশানলে পড়ে,নিজের স্বকীয়তা কে বিকিয়ে দিয়েছেন। আর এই নিজস্ব স্বকীয়তাই মুলত সুখ বা শান্তি নামে পরিচিত। মানুষ সুখের সন্ধানে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আবিষ্কার করেছে পৃথিবী, আবিষ্কার করেছে বিষয়, বস্তু সহ নানা আনুষঙ্গিক বিষয়। তবুও মানুষ যেন একা।অতৃপ্ত আত্নাকে প্রশান্তি দিতে ব্যার্থ হওয়া মানুষগুলো ক্ষুধার্ত সিংহের মতো ঝাপিয়ে পড়ছে সুখের সন্ধানে। 

স্যামুয়েল বেকেট এর ওয়েটিং ফর গডো একটি অ্যাবসার্ডধর্মী নাটক।অ্যাবসার্ড মুলত হলো সেই ধরনের নাটক, যেখানে অসম্ভব কিংবা ভবিষ্যতের কোন বিষয় কে নিয়ে উদ্বিগ্নতার প্রকাশ হয়।হাস্যরসে সাজানো নাটকটিতে

লেখক কয়েকটি চরিত্রের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন। মুল চরিত্র হিসেবে রয়েছেন,,  ভ্লাদিমির এবং এস্ট্রাগন।কিন্তু এদের দুইজন কে ছাপিয়ে এখানে মুক্ষ্য হয়ে উঠছে গডো চরিত্র টি।বেকেটের প্রায় সকল চরিত্রের মতো এরাও জীবনের দুর্বোধ্য ভার বহনে ক্লান্ত, নিঃসঙ্গ, বিচ্ছিন্ন, বিপন্ন, বিষণ্ণ, নৈরাশ্যবাদী, যন্ত্রণাদগ্ধ, ব্যর্থ ও পরাজিত। ‘ওয়েটিং ফর গডো’তে আসলে কিছুই ঘটে না, কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত নেই, টানাপোড়েন নেই, চরিত্রের বিকাশ নেই, অগ্রগতি নেই বা রক্ষা হয় না ঘটনার ধারাবাহিকতা। চরিত্রগুলোও অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করে না। নাটকের শুরুতে আমরা দেখতে পাই ভ্লাদিমির ও এস্ট্রাগন একটি ধূসর প্রান্তরে কোনো এক মিঃ গডোর জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু তাদের অপেক্ষার কোনো কার্যকরী ফল আসে না। দেশে দেশে যুদ্ধ, পুঁজিবাদের উগ্র উত্থান, সীমাহীন লোভ, অর্থ,শক্তি লাভের প্রতি অতি আসক্তি, মানুষের মাঝে চূড়ান্ত জড়বাদিতা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, বিচ্ছিন্নতা মানুষের জীবনকে মূল্যবোধহীন আর চেতনাহীন করে তুলছে। আর এইসব কিছু থেকে বাঁচার জন্য মানুষ পাগল প্রায় হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে, কিন্তু সেই মুক্তির সন্ধান আজও তারা পাইনি। হয়তো বা কোনদিন পাবেন ও না।কারণ প্রকৃতির নিয়ম ই হলো চলমনতা।চলমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অনুসঙ্গ হলো মানুষ। আর সেই মানুষের গতিতে, পৃথিবী পায় আপন গতি।ছুটে চলে প্রকৃতি দুরন্ত ভাবে। আর তাই গগোর কন্ঠে ভেসে উঠেঃ-

"কিছুই হয় না, কেউ আসে না, কেউ যায় না, এটা ভয়ানক!’।"


চরিত্র সমুহঃ--

১.এস্ট্রাগন

২.ভ্লাদিমির 

৩.লাকি

৪.পোজো

৫.বালক

৬.গডো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ