বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ন' মাস ছিল গৌরবের ও সাহসের। হাজার বছরের ইতিহাসে এমন দিন, এমন রাত্রি বাঙালি প্রত্যক্ষ করে নি। দেখে নি এত নির্যাতন, এত হত্যাকাণ্ড। আর এইসব বিষয় গুলো উঠে এসেছে অসংখ্য লেখকের লেখনিতে।নিচে কিছু গল্প দেওয়া হলোঃ--
দুই ব্রিগেডিয়ার
শওকত ওসমান
পাটের গুদামে আগুন লেগেছিল। বিরাট টিনের শেডের নিচে হাজার হাজার ট ৰূপ। কীভাবে অগ্নিকাণ্ড ত হয়, তা কেউ বলতে পারবে না। চারদিকে আগুনে লকলকে দিত যখন সব চেটে-পুটে ছাই করে দিতে বেরিয়ে আসছিল, তখনই খবর পাওয়া যায় ফালে খবর পৌঁছতে বেশি দেরি হয় নি। দমকলবাহিনী লড়াইয়ে নেমে পড়েছিল যেন শত্রুপক্ষ আর এগুতে না পারে। কাছেই নদী। সুতরাং গোলাবারুদের অভাব হয় নি। হোসপাইপের ভেতর দিয়ে পানির ফোয়ারা কামানের গোলার মতো ছিটিয়ে পড়ছিলো।
কিন্তু এই শরু তো লাফিয়ে লাফিয়ে। তাই ফারগেডের সৈন্যসামন্তরা স্থির করেছিল গুদামের চালের একদিক খুলে উপর থেকে পানি মারার বন্দোবস্তই যুক্তিযুক্ত। কয়েকজন ফায়ারম্যান সিঁড়িযোগে চালে উঠে দমাদ্দম নাটবল্টু খুলে টিন টেনে আলগা
করতে লাগল। কেউ কেউ ভেতরে হোসপাইপ ঢুকিয়ে পানি মারতে শুরু করল। কিন্তু আগুনের গোসা যেন সেদিন আর থামতে চায় নি। চালের ক্রমশ তেতে ওঠা টিনগুলো পর্যন্ত আগুনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। রাগ কি কম। ফটফট শব্দে চাল ছাড়া হওয়ার উপক্রম। কোথাও কোথাও নিচে কাঠের আড়া পুড়ে বা ঝলসে গেছে। সুতরাং টিন। আর নিজের জায়গায় থাকতে চাইবে কেন?
এই ক্ষেত্রে যে সব ফায়ারম্যান চালের উপরে উঠেছে তাদের সমূহ বিপদ। কয়েকজন ফায়ারম্যান আগুনের তাপ আর ধোঁয়ার মধ্যে তখন যেন সিলুয়েট ছবি অথবা নড়াচড়া রত প্রেতের দল। গাঁটের ভেতর হয়তো কিছু ভিজে পাট ছিল। ফলে, ধোঁয়া উঠতে লাগল রাশ রাশ।
সব কুণ্ডলী পাকানো অজগর। ফুঁসে ওঠে নি, পাঁয়তারা করছে।
কিন্তু শাবাশ, অগ্নিলৈনিকের দল। অফিসাকের আদেশ পালন করছে বটে। কেউ একচুল এদিক-ওদিক নড়ছে না। অবিশ্যি পরিস্থিতি বিষয়। ক্রমশ আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে। (আগুন এবং পানিতে যেন বক্সিং লড়ছে অথবা কুস্তি। মাঝে মাঝে একে অপরের কোমর জাপটে পাছড়া-পাছড়ি শুরু করে দিয়েছে।
কট-ট-ট... শব্দ হচ্ছে নাটবল্টু খুলে যাওয়ার। শব্দ শুধু হিসহিস হোসপাইপের শিসধ্বনি ।
মানুষের দিক গুৰু। দাঁতে দাঁত কামড়ে তারা দুশমনের মোকাবিলারত।
হঠাৎ সেই দোজখের কড়ার ধোঁয়া এবং আগুনের ঝলকের মধ্য থেকে যেন গায়েবি
আওয়াজের মতো নির্দেশ হেঁকে উঠল, 'ফায়ার মেন গেট ডাউন নেমে পড়, নেমেপড়। একজন অফিসারও টিনের চালে উঠেছিলেন দুশমনের গতিবিধি দেখে অপারেশনের লাইন ঠিক করতে। বোঝা গেল, রণকৌশল বদলাতে হবে। নিচে আরো দুজন জুনিয়র অফিসার ছিলো,সি নিয়র চালের উপর। হুকুম তিনিই দিচ্ছেন।
কিন্তু যিনি গায়েবি আওয়াজ ছাড়লেন, তিনি কোথায়? 'ফায়ারম্যান, গেট ডাউন।' শব্দ বেরুল। শব্দের উৎস কোথায়? তা আর দেখা যায় না। ধোয়ার পুরু ঘন কুণ্ডলীর মধ্যে চোখের কোনো দাম থাকে না। শব্দের উৎস কোথায়? নিচে আগুনের মোকাবিলা চলছিল। আগেকার কায়দা অনুযায়ী।
কিন্তু সমস্ত ফায়ারম্যান জুনিয়র অফিসারসমেত তখন হাকাহাকি জুড়ে দিয়েছে, | ভূঁইয়া সাহেব কোথায়? কোথায় ভূঁইয়া সাহেব .... ??? 1 দুই জুনিয়র অফিসার রীতিমতো আর্তনান চিৎকার দিতে লাগল, ভূঁইয়া সাহেব,
ভূঁইয়া সাহেব।'
কোনো সাড়া মেলে না।
একদিকে দুটো টিন ছিটকে পড়ল।
সমস্ত গুদামের চেয়ে তখন একটি মানুষের কথা বড় হয়ে দেখা দিল। যত লাখ টাকার পাটই থাক, তা একটা মানুষের গানের মূল্যের তুলনায় - কিছুই না।
গুদামের নিচে আগুনের কুকের মধ্যে পড়ে যায় নি তো অফিসার উইয়া সাহেব। উদ্বেগ মথিত চিৎকার ভূি শোরগোলে স্পন্দিত চতুর্দিক। গুদামের প্রায় দশ-বার ফিট দূরে ছিল একটা দোতলা টিনের বাড়ি। সেদিকে আগুন।
যায় নি। কিন্তু সব ধোয়ার তলায় চাপা। হঠাৎ দোতলার বাড়ির টিনের চালে ধপ ধপ শব্দ উঠল। যেন একটা বানর লাফিয়ে
আগুনের হামলা নেই এইদিকে।
বাড়া চান। উপরে কেবল নাটবল্টু কিছুটা আঙুল দিয়ে ধরা যেতে পারে। নচেৎ সবই সমতল। আর আছে ঢেউটিনের বাজ। কিন্তু তা আড়াআড়ি নয় লম্বালখি। সুতরাং ধরবার
জন্যে আর কি সুবিধা পাওয়া যাবে? হয়তো বানর লাফিয়ে পড়েছিল।
(কিন্তু এই বানর সব বানরকে হার মানায়। সেই বানর টিনের চালে লাফিয়ে পড়ে; ছোট ছোট নাটবল্টুর ঠেকটুকু আশ্চর্য নিজের ক্ষিপ্র আঙুলে এমন মানিয়ে নিয়েছিল যে, গোটা দেহের ওজনে সড়নড় নিচে পড়ে হাত-পা ভাঙার জায়গায় হেঁচড়ে চেড়ে শেষে জমিনের ওপর পা রাখল না শুধু কয়েক পা দ্রুত দৌড় মেরে তারপর থামল। এ কী করেছিলেন, ভূঁইয়া সাহেব?”
ভূঁইয়া সাহের। অস্বোয়াস্তি বুক থেকে নামাতে ব্যস্ত প্রশ্নকারীদের মজকুর বানর জবাব দিয়েছিল, ডিউটি ইজ নিউটি.... কর্তবা কৰ্তব্যই ।।
* তখনই আর কোনো কথা না বলে নিয়ে হোসপাইপ হাতে নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল লিয়াদুর রহমান ভূঁইয়া দুশমনের মোকাবিলা করতে।
এমন কাও বহুবার ঘটেছে অফিসার ভূঁইয়ার পেশাগত জীবনে। আগুন আর বিপদের সমুখে সে আর এক মূর্তিতে পরিণত হত। ফায়ার ব্রিগেজের লোক, বন্ধুরা ঠাঁটা করে ভারত, মিস্টার ব্রিগেডিয়ার। মোদ্দাকথা, ভূঁইয়া যেন আগুন দেখলেই জান কবুল করে বসত। আর একবার অম্লের জন্যে সে বেঁচে গিয়েছিল এক পাড়ায় আগুন নেভাতে গিয়ে। কাহিনী তো একটা নয়। বহু ফিরিস্তি বাড়িয়ে লাভ নেই।
সয়ীদ ভূঁইয়া বলত, 'শোন, আগুন তো আপন নয়, মানুষের সর্বনাশা কত কী করে। একটা লোক কিছু গড়ে কত বছরের মেহনত লেগে যায় একটা কারখানা বানাতে। অথচ হারামী আগুন পাঁচ মিনিটে গিলে শেষ করে। কারখানা কি, বাড়ি তো ইট-কাঠ-সিমেন্ট। কিন্তু মানুষ থাকতে পারে তার ভেতর। মানুষের জানের দাম কি টাকায়, মাপা যায়? তাছাড়া '
এই সময় হয়তো আপনি নোফা নেবেন, তাছাড়া আর কী, ভূঁইয়া সাহেব?" সে তখন তার ছিপছিপে কালো টাইট গতরখানা একটু বাঁকিয়ে, সঙ্গে সঙ্গে সিগারেট ধরিয়ে সামান্য টান মেরে জবাব দেবে, শোনেন, ডিউটি ইজ ডিউটি... কর্তব্যই কর্তব্য। ধরুন এই পাট গুদামের কথা। আমরা পাট দিয়ে... বিনিময়ে বিবেশি জিনিস কিনি, যা আমাদের দেশে তৈরি হয় না যেমন, ওষুধপত্র, রেলগাড়ির নানা সরঞ্জাম, লতা-ডিমারের কয়রা কটা জিনিস আর এদেশে তৈরি এসব জিনিস বিদেশ থেকে, না এলে গোটা দেশ কানা। এখন বলুন আগুন মানে কী? আর আমি তো ফায়ার সার্ভিসের
লোক আমার কোনো কর্তব্য নেই। তবে মাস মাস বেতন নিই কেন?' সমীন ভূঁইয়ার কন্ঠ পর এই সময় চড়ে যেন অজানিতে। তখনই আবার গানে নামত।
নিজের প্রাণের নাম আছে। বন্ধুবাস্তুর হিতাকাঙ্ক্ষীরা তা দেখিয়ে দিলে সে জবাব দিত একদম পিতৃদেবের দোহাই মেরে, 'আমি, হ্যাঁ আমার বাবা মরহুম আবদুল মাদ্রিদ বলতেন, বাজান, মানুষের বিপদ-আপদ : দেইখলে নিজের মসিবত মনে কইরো। মানুষ হওনের ওই একটাই সিধা রাস্তা আছে, আর নাই। এ কথা হরগি কখনও না।
হয়তো পিতার বাণী অথবা মূর্তি সমীন ভূঁইয়াকে অমন সাহস যোগাত মসিবতের সামনে, বিপদের দরিয়ায়। অতি সংক্ষেপে, এই হচ্ছে সমীন ভূঁইয়া, বন্ধুজনের কাছে ব্রিগেডিয়ার।
একদিন ভূমিকম্পের মতো হঠাৎ এসে পড়ল।
২৫শে মার্চ, ১৯৭১ সাল। এই দিনের বা রাত্রির কি কোনো ব্যাখ্যা দরকার আছে, বাংলাদেশের অধিবাসী বলেদাবি করে এমন কারো কাছে? অধীন ভূঁইয়া সারাদিনের কাজ ও উত্তেজনার পর নিজের বাড়ি ফিরেছিল। যথারীতি সেরেছিল রাতের আহার। তারপর ঘুমিয়ে পড়েছিল রাত দশটার মধ্যেই। সাধারণত এমন হয় না। সারাদিনের ক্লান্তির জন্যেই হয়তো অমন সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়েছিল।
হঠাৎ ঢাকা শহর কেয়ামতের ভূমিকার শব্দে সেই রাত্রে চমকে উঠেছিল বারবার।
শেল-মর্টার...ব্রাশ ফায়ারের আওয়াজ চতুর্দিকে।
সয়ীদ ভূঁইয়া ধড়মড়িয়ে উঠে পড়ল। বাইরে বেরিয়ে এল তখনই। সঙ্গে আতঙ্কিতা
সয়ীদ ভূঁইয়া এদিক-ওদিক তাকাল। হঠাৎ তার চোখে পড়ল শহরের দক্ষিণ দিকে
দাউদাউ লাল আগুন এবং ধোঁয়ার কুরুণী। তার এলাকা থেকে বেশ দেখা যায়। ভূঁইয়া চট করে তার স্ত্রী ও অন্যান্যদের নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়ে নিজে চটপট তার হাফপ্যান্ট আর খাকি শার্ট পরে বেরিয়ে এল। স্ত্রী বারণ করল না। কারণ, সে জানে, নিষেধের কোনো মানে নেই অমন ক্ষেত্রে।
গ্যারেজ থেকে নিজের ড্রিপ স্টার্ট দিয়ে সেই রাতে তাড়াতাড়ি পৌঁছেছিল নিকটস্থ ফায়ারস্টেশনে। সবই চটপট ঘটছে। ওদিকে মারণাস্ত্রের বিচিত্র শব্দ উঠছে।
বুম...শ। ট।টট
অফিসার নিজে স্টেশনে। দমকলবাহিনীর লোকেরা এমনিতেই তৈরি থাকে। তারা গাড়ি বের করে ছুটিয়ে দিল। পেছন পেছন ভূঁইয়া জিপে নিজে একা। রাত্রি পৌনে বারটা।
শহরময় প্রণয়সঙ্গীত। টেলিফোন ডেভ, মৃত।
ভূঁইয়া তার সহকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিল, 'আগুনের শিখা ধরে গাড়ি চালিয়ে যাও।" সেইভাবে তারা রাস্তা এবেনা পর এক পার হচ্ছিল। সবই জনমানবহীন। কাজেই স্পিডে কোনো ব্যাঘাত ঘটছিল না।
পলাশী ব্যারাকের কাছে তাদের গাড়ি এসে পড়েছে। মুসলিম হলের দিকে মুখ। সাঁজোয়া গাড়ির একটা ছোট দেশ এনে ফেটে পড়। সোজা হিট। সঙ্গে সঙ্গেই ব্রাশ
ফায়ার।
দমকলের বিরাট গাড়িটা ছিটকে পড়ে একদিকে ধাক্কা খেয়ে থেমে গেল। সমস্ত ফায়ারম্যান যে কজন ছিল সঙ্গে সঙ্গে লুটিয়ে পড়ল। কারো কারো লাশ গাড়ির ওপর, কারো বাংলাদেশের মাটির আশ্রয়ে।
টুট টু .....
রাইফেলের গুলিও চলছে।
সয়ীদ ভূঁইয়া বুঝতে পারে না, হঠাৎ কী ঘটে গেল। একটা গুলি তার বুকে লেগেছে।
জিপের স্টিয়ারিং তখনো এক হাতে। আর এক হাতে বুক চেপে ধরেছে ভূঁইয়া। একটামিলিটারি গাড়ি শা...শা... ছুটে আসছে। আশ্বস্ত যেন ভূঁইয়া। চিৎকার নয়, চ্যালেঞ্জের
ভঙ্গির কণ্ঠে সে ডাক দিলে, 'ভাইযো, অফিসার... অফিসার...।"
অবশিষ্ট জিপ কখন থেমে গেছে। ভূঁইয়া যেন বিশ্ববাসীকে আহ্বান করবে। তাই
প্রাণপণ চিৎকার দিল, 'ভাইয়ো অফিসার... অফিসার...।' দিটো মিলিটারি জিপ তার পাশে এসে থামল। কয়েকজন নেমে পড়ল। ব্রিগেডিয়ার আসলাম নামে এক অফিসার ভূঁইয়ার লিপের সাথে এসে দাঁড়াতে জখমী কণ্ঠে যতদূর গ্রাম। বাড়ানো চলে, তেমনই পর্যায়ে তুইয়া বললে, তাহলোগ, আপলোগ মেরা সব ফায়ারম্যান
কো কিউ মরা...হাম লোগ সব ডিউটি যে নিবলা শহর যে আগ (আগুন) লাগা... হাম গৌগ সব ফায়ারব্রিগেড কা আদমি...।
"কিয়া?" ব্রিগেডিয়ার আসলামের পাশে আর একজন দাঁড়িয়ে ছিল, সে জিজ্ঞেস করে
"কিয়া?” এবার প্রশ্ন ব্রিগেডিয়ারের।
“হাম...।' ভূঁইয়া চট করে জবাব দিতে পারে না। "বিয়া?" এবার প্রশ্ন। ব্রিগেডিয়ারের জিজ্ঞাসা।
"হামলোগ ডিউটি করনে নিকলা। সয়ীদ ভূঁইয়া জবাব দিল।
*ডিউটি করনে আয়া?"
'ডিউটি' আসলামের সঙ্গী অফিসার হেসে উঠল।
“হাঁ।' ভূঁইয়ার জবাব। এবার দুই অফিসার প্রায় একসঙ্গে খেঁকিয়ে উঠল, শোন বাঙ্গালিকে বাচ্চা হাম ভি
ডিউটি মে নিকলা। মেরা আব ডিউটি হ্যায় আগ (আগুন) লাগানা জায়না তোমরা হ বুজানা (নেভানো)... সমঝা?
সারা জীবনের শিক্ষা হয়তো সেদিন সয়ীদ ভূঁইয়ার সামনে বিরাট প্রশ্নচিহ্নের মতো খাড়া হয়েছিল। জবাব দিতে গিয়ে তার ঠোঁট নড়েছিল মাত্র কয়েকবার। কারণ পরক্ষণে তার জখম বুক থেকে হাত খসে যায় এবং সে একনিকে কাত হয়ে পড়ে গিয়েছিল। সরীদ ভূঁইয়া জিপের ওপর কী বলতে চেয়েছিল সেদিন? আমরা কেউ কোনোদিন তার হদিস পাব না।
0 মন্তব্যসমূহ