Hot Posts

6/recent/ticker-posts

প্রাচীন যুগের পরিচয় ও নিদর্শন

----প্রাচীন যুগের পরিচয় ও নিদর্শন, প্রাচীন যুগের পরিচয় ও নিদর্শন, যুগ বিভাজন বলতে কি বুঝ, বাংলা সাহিত্যের কয়টি যুগ, প্রাচীন যুগের নিদর্শন কি কি, চর্যাপদ, চর্যাপদ এর বৈশিষ্ট্য রচনা কাল ---

***বিঃদ্র-বাংলা বিভাগের সকল পড়াশোনা পেতে ব্লগটিতে যুক্তথাকুন   https://monoweredu13.blogspot.com/?m=1

 

বাংলা সাহিত্যের যুগ কে প্রধানত তিনটি যুগে ভাগ করা হয়। 

(১)প্রাচীন যুগ (৬৫০-১২০০ খ্রীস্টাব্দ)

(২)মধ্য যুগ (১২০০-১৮০০খ্রীস্টাব্দ)

(৩)আধুনিক যুগ(১৮০০-বর্তমান)

এই সময়ে বিভিন্ন সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি করা হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে সাহিত্যের বচনধর্মীয়তা এবং লেখার রীতি ও পরিবর্তিত হয়েছে। নিচে প্রাচীন যুগের পরিচয় ও নিদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ-

প্রাচীন যুগঃ-

খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকে বঙ্গদেশ মৌর্যাধিকারে আসে এবং সম্ভবত সেইসঙ্গে আর্যভাষাও এদেশে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। আর্যভাষার সরাসরি প্রভাব ছাড়াই, প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলার উৎপত্তি-সঠিক কোন সময় থেকে তা সুস্পষ্ট বলা না গেলেও বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম যে-নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে ভারসময়কাল ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সুপ্রমাণ দিয়ে ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ বলে নির্ধারিত করেছেন।


বাংলার প্রাচীন যুগে এদেশে বৌদ্ধধর্মের প্রভাব ছিল যথেষ্ট। বৌদ্ধ ধর্মাচার্যগণ স্থানীয় ভাষায় অনেক আধ্যাত্মিক পদ রচনা করেছিলেন। নেপাল রাজদরবারের পুঁথিশালা থেকে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ‘চর্য্যাচর্য্যাবিনিশ্চয় (চিত্র : ১) নামের একটি আদি নিদর্শন খুঁজে পান। “হাজার বছরের পুরান বাঙলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা", সরোজ বজ্রের (সরহপাদের) দোহাকোষ' ও কাহ্নপাদের 'ডাকার্ণব'—এই তিনটি একত্রে তিনি সম্পাদনা করেন এবং বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ্ কর্তৃক তা প্রকাশিত হয় (১৯১৬ খ্রিঃ)। এই সংকলনটি পরবর্তী পর্যায়ে শুধু 'চর্যাপদ' নামে পরিচিত হয়। প্রাচীন বাংলার একমাত্র সাহিত্যিক এই নিদর্শনে বৌদ্ধ সহ-জিয়াদের সাধনভজন-মূলক ৪৭টি পদ রয়েছে; এগুলো সুনির্ধারিত তাল, রাগ ও সুরে গীত হবার জন্য রচিত। এগুলোর ভাষা ও ভাব সর্বত্র সহজবোদ্ধ নয়। সেজন্য এর ভাষাকে বলা হয়েছে 'সন্ধ্যা ভাষা', 'আলো আঁধারির ভাষা’। সেগুলোর কিছু বোঝা যায় আর কিছু বোঝা যায় না। তবে চর্যাপদের যথেষ্ট সাহিত্যিক মূল্য রয়েছে। এগুলোর উপমা-রূপক, প্রাকৃতিক বর্ণনা, সমাজচিত্র ইত্যাদি বিবেচনায় চর্যাপদগুলোর সাহিত্যিক ও ভাষানিদর্শনগত মূল্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে-আগ্রহীদের কাছে সমধিক—যদিও চর্যাপদগুলোর আভ্যন্তরিক আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা প্রহেলিকাময় ও অনেকটাই দুর্বোধ্য। তবে শব্দ, উপমা, উৎপ্রেক্ষা এবং কথার আশ্চর্য সংযম চর্যাগুলিকে একটি সংহত রূপদান করেছে। এই পদগুলোর বৌদ্ধাচার্য রচয়িতাগণ ‘সিদ্ধাচার্য' নামে খ্যাত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন লুইপা, ভুসুক পা, কানু পা, শান্তি পা প্রমুখ। চর্যার পদগুলো ছাড়া অবশ্য প্রাচীন বাংলা ভাষার আরও কিছু কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়; কিন্তু সেগুলো ভাষার নমুনা মাত্র, সাহিত্য নয়।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ