Hot Posts

6/recent/ticker-posts

হাজার বছর ধরে-জহির রায়হান

**হাজার বছর ধরে-জহির রায়হান
--হাজার বছর ধরে জহির রায়হান হাজার বছর ধরে উপন্যাস আলোচনা হাজার বছর ধরে উপন্যাস রিভিউ হাজার বছর ধরে উপন্যাসের চরিত্র হাজার বছর ধরে উপন্যাসের বিষয়বস্তু --

**বিঃদ্র-বাংলা বিভাগের সকল পড়াশোনা পেতে ব্লগটিতে যুক্তথাকুন https://monoweredu13.blogspot.com/?m=1 

#বুক_রিভিউ 

বইয়ের নামঃ হাজার বছর ধরে 

লেখকঃ জহির রায়হান 

"হাজার বছর ধরে উপন্যাসটির কাহিনীর প্রেক্ষাপট বড্ড সাদামাটা। আবহমান গ্রাম্যজীবনের কয়েকজন মানুষকে নিয়ে গড়া একটা গল্প। যে গল্পের চক্ষু জলে ছায়া পড়েছে বিষাদের"।

কাহিনী সংক্ষেপঃ 

একটি দীঘিকে ঘিরে কিছু রুপকথার গল্প। দীঘির নাম " পরির দীঘি"। দীঘির পাড়ে ছোট ছোট খুপরি ঘরে আটটি পরিবারের বাস৷ তাদের পরিশ্রান্ত জীবনাচরণ যার অনেকটাই কুসংস্কারাচ্ছন্ন। অন্ধকার এই সমাজে আনাচকানাচে বাস করে কুসংস্কার, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, নারী নির্যাতন। পরির দীঘির পাড়ের এই গ্রামটির গোড়াপত্তন কবে হয়েছিলো কেউ বলতে পারেনা।

বৃদ্ধ মকবুলের বউ টুনির মন চায় খোলা আকাশের নিচে হেসে বেড়াতে৷ সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় মন্তুকে। মন্তু অনাথ। টুনি আর মন্তু উভয়ে অব্যক্ত ভালোবাসার সাগরে হাবুডুবু খায় কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে কিছু বলতে পারেনা মুখ ফুটে। মকবুলের মৃত্যুর পর মনের কথা টুনিকে বললেও ততক্ষণে অনেক  দেরি হয়ে গেছে। টুনি হারিয়ে গেছে মন্তুর জীবন থেকে। 


কেনো টুনি তার আরাধ্য প্রেমকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো যার জন্য সে প্রতিবেশী রশিদের স্ত্রী সালেহা কে প্রহার করতেও কুণ্ঠাবোধ করেনি। সে আম্বিয়াকে বিবাহ করার মন্ত্রণা দিয়েছিলো মকবুল বুড়োকে। আবুলের আঘাতেই মকবুল বুড়োর মৃত্যু হয়। বিবেকের দংশনের জন্য স্বল্প বয়সী তরুণী তার সমগ্র জীবন নিঃসঙ্গতার অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়। 

কালের আবর্তে সময় গড়ায়। প্রকৃতিতেও পরিবর্তন আসে। শুধু আসেনা অন্ধকার, কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রাম বাংলার সমাজে। 

বইটির শেষ উক্তি ছিলো " রাত বাড়ছে। হাজার বছরের পুরোনো সেই রাত।"

**উপন্যাসের চরিত্রঃ 

প্রধান চরিত্র মন্তু আর টুনি। বাড়ির প্রধান মকবুল বুড়ো। টুনির মা, ফকিরের মা, আবুল, গণু মোল্লা, আম্বিয়া, করিম শেখ, মনোয়ার হাজী, করিম শেখের বাবা, কাসেম শিকদার। 


পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ 

ছোট্ট উপন্যাসে গ্রামের বিভিন্ন বিষয় যেমন যৌতুক প্রথা, নারী নির্যাতন, রোগ, কুসংস্কার, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, মানুষে মানুষে বিবাদ আরো গ্রামের বিভিন্ন নেতিবাচক দিক উঠে এসেছে। তবে একটা বিষয়, উপন্যাসের ঘটনাপ্রবাহ, ঘটনাস্থল, বিস্তার, ভাষাতত্ত্ব বিবেচনায় এটাকে শুধু সামাজিক উপন্যাস বলা যায় না। এখানে দেখানো হয়েছে ত্রিভুজ প্রেমের দৃশ্য। উপন্যাসটির চরিত্রের মধ্যে রহস্য খুঁজতে গেলে এখানে মনস্তাত্ত্বিক গল্পের আভাস মেলে৷ উপন্যাসের প্রতিটি বাক্যতে ছিলো মাধুর্যতা, মাধুরি মেশানো৷


ব্যক্তিগত মন্তব্যঃ 

 জহির রায়হান এর প্রতিটি উপন্যাস আমার কাছে অতুলনীয়। বিষন্নতা ঘিরে রেখেছে বইটি পড়া শেষ করার পর৷ জহির রায়হানকে দ্বিতীয় বারের মত পড়লাম,তার লেখা উপন্যাসের মধ্যে আমার পড়া দ্বিতীয় বই এটা।

বাংলা সাহিত্যে এই উপন্যাস বিস্ময়ে ভরা আবেগ হয়ে থাকবে হাজার বছর ধরে এই ধরনীর বুকে।ধন্যবাদ।

**রিভিউ প্রদানকারীঃ

নামঃরুপিয়া ফারজানা খান
শিক্ষার্থী,বাংলা বিভাগ। 
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর। 
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ