--শেষের কবিতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বুক রিভিউ শেষের কবিতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বুক রিভিউ শেষের কবিতা শেষের কবিতা উপন্যাস এর বিষয়বস্তুু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর কাব্যোপন্যাস শেষের কবিতা র মুলভাব--
★ বুক রিভিউ★
বইয়ের নামঃশেষের কবিতা
লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ধরণঃউপন্যাস
বইয়ের নাম "শেষের কবিতা" হলেও এটি আসলে একটি উপন্যাস। কাব্যধর্মী উপন্যাস ও বটে।
'অমিত রায়' এর পরিচয়ের মাধ্যমে উপন্যাসটি শুরু হয়। অমিত একজন শিক্ষিত ছেলে এবং পড়াশোনা করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সে তার ব্যারিস্টারি পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে আসে এবং সেইসাথে শুরু হয় পরিবার থেকে তার বিয়ের জন্য শোরগোল। তার পরিবারের সকলেই তাকে বিয়ে করানোর জন্য ব্যস্ত। কিন্তু অমিত ৮/১০টা ছেলের মত নয়। তার বিবেচনা এবং বুদ্ধি অন্যদের থেকে আলাদা।
অমিতের বাবা একজন ব্যারিস্টার এবং তার দুই বোন 'সিসি ও লিসি'। অমিতের উন্নত রুচিবোধের সাথে তার পরিবারের যেন কারোর রুচির মিল নেই। 'সিসি ও লিসি' অমিতকে বিয়ে করানোর জন্য সবসময় তাড়া দিতে থাকে। কিন্তু অমিত ফ্যাশন চায় না, চায় স্টাইল।
অমিত একদিন ঘুরতে যায় শিলঙ পাহাড়ে। সেখানে কোন এক নাটকীয় কায়দায় পরিচয় হয় লাবণ্যর সঙ্গে। তারপর আস্তে আস্তে তাদের পরিচয় আরো দূর গড়াতে থাকে।
শিলঙে অমিতের পরিচয় হয় লাবন্যর মাসি যোগমায়ার সঙ্গে। যোগমায়া যেন অমিতকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করে। অমিতের বিচার-বিবেচনা ও রুচিবোধ দেখে যোগমায়া চিন্তা করে অমিতের সঙ্গে লাবণ্যর সংসার হবে। সে মনেপ্রাণে চাইত যেন অমিত এবং লাবণ্য এক হয়ে যায়।
লাবণ্য এম.এ পাস করেছে এবং তার বাবা অবনীশ দত্তের রয়েছে ব্যক্তিগত লাইব্রেরি। ব্যক্তিগত লাইব্রেরি থাকার দরুন লাবণ্যর বইয়ের প্রতি প্রচুর নেশা। লাবণ্যর মনেও অমিতের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়। তবুও সে অমিতের উন্নত রুচিবোধের সামনে নিজেকে নিতান্তই ছোট মনে করে এবং এ থেকেই তাঁর মনে ভয়ের বসবাস।
উপন্যাসে অমিত লাবণ্যকে 'নিবারণ চক্রবর্তী'র কবিতা প্রায়ই আবৃত্তি করে শোনাতো। কিন্তু লাবণ্যর বুঝতে বাকি থাকে না, অমিত রায় আসলে নিবারণ চক্রবর্তী।
অমিত এবং লাবণ্যর বিয়ে পাকাপাকি হয়।
কিন্তু হঠাৎ করে যেন ঝড়ো হাওয়া এসে জুটে। কলকাতা থেকে "সিসি এবং কেতকী" এসে হাজির যোগমায়ার বাড়িতে।
কেতকী হল সিসির বান্ধবী এবং এছাড়াও কেতকীর যেন অমিতের সঙ্গে একটি নিবিড় সম্পর্ক জড়িয়ে আছে।
আচমকা অমিতের সঙ্গে কেতকীর বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু অমিত এই বিষয়টি লাবণ্যর কাছে গোপন করে। হয়তো চিন্তা করে লাবণ্য তাকে ভুল বুঝবে।
এখানে লাবণ্য অমিতকে চিঠি লিখে পাঠায় এবং চিঠির কোনো এক কোণে উল্লেখ করে, শোভনলালের সাথে লাবণ্যর বিয়ে পাকাপাকি হয়ে গিয়েছে। লাবন্যর বাবা অবনীশ দওের ব্যক্তিগত লাইব্রেরীতে শোভনলাল প্রায়ই আসত এবং সেই থেকেই লাবণ্যর প্রতি তার ভালোবাসার সূচনা হয়। হয়তো কোন এক বিচিত্র কারণেই তাদের হঠাৎ করে বিয়ে পাকাপাকি হয়ে যায়।
#পাঠ প্রতিক্রিয়া:
"শেষের কবিতা" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রোমান্টিক উপন্যাস। উপন্যাসটির শেষের দিক থেকে কাহিনী হঠাৎ করে পরিবর্তন হয় যা খুব গোছালোভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
উপন্যাসটির সবচেয়ে চমৎকার বিষয়টি হলো "কথোপকথন"।
উপন্যাসের বেশ কয়েকটি উক্তি মানুষকে কিছুটা চিন্তার সাগরে ভাসিয়ে দেবে আবার কয়েকটি কবিতার লাইন যেন মানুষের মনে প্রেমের সঞ্চার করবে-
★"কোমল হীরের পাথরটাকেই বলে বিদ্যে, আর ওর থেকে যে আলো ঠিকরে পড়ে তাকেই বলে কালচার। পাথরের ভার আছে, আলোর আছে দীপ্তি"।
# "For God sake, hold your tongue
and let me love".#
উপন্যাসটি শেষ হয় "কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও" - কবিতার মাধ্যমে, যে কবিতা পুরো উপন্যাসেরই ভাবগুলো তুলে ধরে--
*প্রেমের পরিণতি বিয়েই হয় না।
কিছু কিছু প্রেম অপূর্ণতার মাঝে ও পূর্ণতা অর্জন করে।
তাইতো উপন্যাসের শেষে ধ্বনিত হয়-
হে ঐশ্বর্যবান,
তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান--
গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।
হে বন্ধু,বিদায়।*
*রিভিউ প্রদানকারী--
0 মন্তব্যসমূহ