Hot Posts

6/recent/ticker-posts

সনেট / sonnet/চতুর্দশপদী কবিতা


---সনেট  sonnet চতুর্দশপদী কবিতা সনেট কি চতুর্দশপদী কবিতা কাকে বলে চতুর্দশপদী কবিতার বৈশিষ্ট্য অষ্টক ষটক সনেট এর বৈশিষ্ট্য চতুর্দশপদী কবিতা বলতে কী বোঝ---
**বিঃদ্র-বাংলা বিভাগের সকল পড়াশোনা পেতে ব্লগটিতে যুক্তথাকুন https://monoweredu13.blogspot.com/?m=1 

*** সাহিত্যের অনেকগুলো শাখার মধ্যে কবিতা অন্যতম। কবিতা কবির চিন্তা মনন,অভিজ্ঞতা র বহিঃপ্রকাশ। মানুষ প্রকৃতি আর বাস্তবতা র সকল রং এর আচর কবি তার লেখেনিতে তুলে ধরেন।নন্দনবাদী লেখক ও কবি এডগার অ্যালান পো কবিতা বলতে বুঝেছিলেন, 'সৌন্দর্যের ছন্দিত সৃজন হয় (the thy thmic creation of beauty). ভিকটোরীয় যুগের কবি-সমালোচক ম্যাথু আরনল্ডের অভি বিবেচনায় কবিতা ছিল 'জীবনের সমালোচনা' – 

'Poetry is at bottom a criticism of life under the conditions fixed for such a criticism by the laws of poctic turth and poetic beauty.' 

কবিতার শ্রেণি বিভাগের মধ্যে সনেট/sonnet/চতুর্দশপদী কবিতা অন্যতম।

সনেট (Sonnet) বা চতুর্দশপদী কবিতা :

 ইংরেজ কবি কোলরিজ 'সনেট’ বলতে বুঝেছিলেন এমন একটি ক্ষুদ্র কবিতা যাতে একটি অখন্ড ও সংহত ভাবকল্পনা বা অনুভূতি আত্মপ্রকাশ করে— 

A small poem, in which some lonely feeling is developed। 

মন্ময় কবিতার এই বিশেষ রূপ 'সনেট', যে শব্দটির উদ্ভব ইতালীয় ‘সনেটো’ বা ‘মৃদুধ্বনি' থেকে।সমদৈর্ঘ্যের চোদ্দটি পংক্তিতে ও একটি বিশেষ ছন্দোরীতিতে যখন কবিমনের একটি অন্ত ভারকল্পনা কাব্যরূপ লাভ করে তখন আমরা তাকে সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা বলে চিহ্নিত করি। ইতালীয় সনেট, যাকে পেত্রার্কের নামানুসারে ‘পেত্রার্কীয় সনেট’ও বলা হয়ে থাকে, দুটি ভাগ বা পর্বে বিভক্ত ‘অষ্টক’ (Octave) ও 'ঘটক' (Sestet)। 'অষ্টক’ অর্থাৎ প্রথম আট-পংক্তিতে প্রশ্ন কিংবা বিবরণের মাধ্যমে কবিতার মূল ভাববস্তুর আভাস দেওয়া হয়। আর ‘মটক’ পর্বে অর্থাৎ পরবর্তী ছয়-পংক্তিতে সেই প্রশ্ন বা অবতারণার উত্তর বা সমাপ্তি সূচিত থাকে। ‘অষ্টকে’র আট পংক্তি আবার দুটি চারপংক্তির 'চতু' (Quatrain) দ্বারা নির্মিত যার মিলবিন্যাস কখ খক, কহু ক,। ‘যটক’ অংশে মিলের ক্ষেত্রে কিছু অদল-বদলের স্বাধীনতা পান কবির – গাঙ, গাঙ অথবা গদগ, গাগ। 'ঘটকের’ তিন-পংক্তির এই প্রত্যেকটি ভাগকে বলা হয় 'ত্রিপদিকা' (Tercet)। এই পেত্রাকীয় সনেটে ‘অষ্টকে’র শেষে থাকে যতি এবং ‘ঘটকে’ যাওয়ার সময় কবিতার মেজাজেরও বদল লক্ষ্য করা যায়। এই বদল, ইতালীয় পরিভাষায় 'Volta', কখনো কখনো দশম লাইনেও দেখতে পাওয়া যায়, যেমন মিলটনের সনেটে।শেরূপীয়ার প্রবর্তিত সনেট কাঠামোর উদাহরণ হিসাবে দেবেন্দ্রনাথ সেনের “অশোকগুচ্ছে'' অন্তর্ভুক্ত. এই সনেটটি উদ্ধার করা যাক্‌:

হে অশোক,কোন রাঙা-চরণ-চুম্বনে---(ক)

মর্মে মর্মে শিহরিয়া হলি লালে লাল?--(খ)

কোন দোল-পুর্ণিমায় নব বৃন্দাবন ----(ক)

সহর্ষে মাখিলি ফাগ, প্রকৃতি-দুলাল?--(খ)

কোন চির-সধবার ব্রত-উদযাপনে--(গ)

পাইলি বাসন্তী শাড়া সিন্ধুর বরণ ?--(ঘ)

কোন্ বিবাহের বাত্রে বাগর ভবনে--(গ)

একরাশি ব্রীড়া হাসি করিলি চয়ন?--(ঘ) 

বৃথা চেষ্টা – হায়! এই অবনী মাঝারে--(ঙ) 

কেহ নহে জাতিস্মর – তরু-জীব-প্রাণী !--(চ)

 পরাণে লাগিয়া ধাঁধাঁ আলোক আঁধারে---(ঙ)

 তরুও গিয়াছে তুলে অশোক কাহিনী ! --(চ)

শৈশবের আবছায়ে শিশুর ‘দেয়ালা',--(ছ)

তেমতি, অশোক, তোর লালে লাল খেলা!--(ছ)


রসেটির, The House of Life এক আত্ম-জৈবনিক প্রেম-কাহিনীকে বেদনাঘন রূপ দিয়েছে। মধুসূদন দত্ত, দেবেন্দ্রনাথ সেন, মোহিতলাল মজুমদার থেকে জীবননান্দ দাশ, অজিত দত্ত প্রমুখ বাংলা ভাষায় ‘সনেট’কে এক মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

**তথ্যসংগ্রহ ---

(সাহিত্যের রুপ-রীতি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ--কুন্তল চট্টোপাধ্যায়))

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ