Hot Posts

6/recent/ticker-posts

চর্যাপদ এর ভাষা /ভাষা বৈশিষ্ট্য /ব্যাকরণ/প্রশ্ন/ উত্তর


** চর্যাপদের ভাষা বাংলা "—এই উক্তি কতদূর সত্য আলোচনা কর।

***“চর্যার ভাষা বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন।" — এই মন্তব্যের পক্ষে ওবিপক্ষে যেসব ভাষাতাত্ত্বিক যুক্তি আছে সেসব আলোচনা করে তোমারমতামত ব্যক্ত কর।

***চর্যাপদগুলোর ভাষা যে বাংলা তা ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের সাহায্যে প্রমাণ কর।

***চর্যাপদের ভাষা যে বাংলা, এ সম্পর্কে পণ্ডিতগণের মতামত আলোচনা কর।

**-*'চর্যাপদের ভাষা' শীর্ষক একটি নিবন্ধ রচনা কর।

***"চর্যাপদের মধ্যে এমন কতকগুলো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় যার দ্বারা বুঝাযায় এগুলি বাংলা ভাষারই প্রাচীনতম নিদর্শন।" আলোচনা কর।

***চর্যাপদের ভাষা কি বাংলা? আলোচনা কর।

****ব্যাকরণগত বৈশিষ্ট্য আলোচনা করে প্রমাণ কর যে, চর্যাপদের ভাষাবাংলা।

****বিঃদ্র-বাংলা বিভাগের সকল পড়াশোনা পেতে ব্লগটিতে যুক্তথাকুন   https://monoweredu13.blogspot.com/?m=1



উত্তরঃ---

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে চর্যাপদ একটি মাইলস্টোন। হয়তোপ্রাচীনতম ও প্রথমও। এখান থেকেই বাংলা সাহিত্যের শুরু।চর্যার প্রাপ্ত পুঁথির লিপি বাঙলা। নব্য ভারতীয় আর্য ভাষাসমূহের বিবর্তন ধারায় বাংলাপ্রাদেশিক ভাষানিচয়ের মধ্যে অর্বাচীন নয়।পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিংহের পুরোহিত পুত্র রাধাকিষণ ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতেরসকল ভাষার পুঁথি সংরক্ষণের জন্য লর্ড লরেন্সকে অনুরোধ জানায়। লরেন্স প্রাদেশিকগভর্নরদের সাথে পরামর্শ করে পুঁথি সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন। বংগীয় এশিয়াটিক সোসাইটি

ড. রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সাহায্যে পুঁথি সংগ্রহের কাজ শুরু করে। তাঁর মৃত্যুতে ১৮৯১-এমহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপর এ কাজের ভার পড়ে। তিনি বেশ কিছু পুঁথিআবিষ্কার করেন, যেমন ধর্মমঙ্গল, শূন্যপুরাণ

বংগীয় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রদত্ত দায়িত্ব পেয়ে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীধর্মমঙ্গল, শূন্যপুরাণের মত কিছু পুঁথি সংগ্রহ করেন। বৌদ্ধ ধর্ম ও বাঙলার বৌদ্ধ সাহিত্যসম্পর্কে তার জানার আগ্রহের কারণে তিনি নেপাল যান ১৮৯৭ ও ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে।ডাকার্নব সুভাষিত সংগ্রহ দোহাকোষ পঞ্জিকা ইত্যাদি নকল তিনি নেপাল থেকে সংগ্রহকরেন। ১৯০৭ সালে আবার নেপাল যান। সেখানে 'চর্য্যাচর্যবিনিশ্চয়' দোহাকোষ

ইত্যাদির নকল নিয়ে আসেন।১৯১৬ সালে তাঁরই সম্পাদনায় “হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধ গান ওদোহা" নামে গ্রন্থ বের করেন। এ গ্রন্থের অন্তর্গত সকল গ্রন্থেরই ভাষা বাঙলা নয়, একমাত্রচর্যাপদ-এর ভাষা বাংলা। চর্যাপদ আবিষ্কারের পর পণ্ডিতদের মধ্যে এর ভাষা নিয়ে বিতর্কদেখা দেয়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সংকলিত চারটি গ্রন্থই হাজার বছরের পুরাণ বাংলায় রচিতবলে অভিমত দেন। তিনি ভাষাতাত্ত্বিক নন, ভাষাবিদদের দৃষ্টিতেও তিনি সংকলনটি বিচারকরেন নি। তবে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ Outlines of An Historical Grammar of the

Bengali Language শীর্ষক বক্তৃতায় বাংলা ভাষার আমি, তুমি, তুই, আপনি, কাণ্ডারি,কেডুয়াল ও করিস শব্দসমূহের প্রাচীন রূপ চর্যায় প্রদর্শন করেন। বাংলা সাহিত্যে এসবশব্দের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতাও দেখানো হয়, তবে বিজয়চন্দ্র মজুমদার চর্যার ভাষাকেখিচুড়ি ভাষার সমষ্টি বলে মত প্রকাশ করেন। তবে সেখানে হিন্দির প্রাধান্য বেশি বলেতিনি মনে করেন। ১৯২৬ সালে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তার 'বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ওবিকাশ' বিষয়ক গবেষণা গ্রন্থে চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত বলে প্রমাণ দেন। অতঃপর

ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যার ভাষা সম্পর্কে স্বমত ব্যক্ত করেন।হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর বিশ্বাস যাঁরা এ পদগুলো লিখেছেন তারা বাঙালি। যদিও অনেকের ভাষারএকটু একটু প্রভেদ আছে, তবুও চর্যাপদ বাঙলা ভাষায় রচিত। মূলত ব্যাকরণে তাঁর এমনবুৎপত্তি ছিল না, ফলে বিভিন্ন ভাষার রচয়িতার স্থান ও কিছু সংখ্যক শব্দ দেখে কোনরচনার জাত নির্ণয় সঠিক হয় না। বিজয়চন্দ্র মজুমদার বলেছেন- চর্যার ভাষার সাথেউড়িয়া ও মৈথিলা ভাষার মিশ্রণ লক্ষণীয় ১ নং চর্যায় বি, পইঠো- হিন্দি শব্দ। হাঁড়িতেভাত নাই- এই খাঁটি বাংলা বাক্যটি উড়ি বা হিন্দি বাক্যের অন্তর্গত। 'দুহিল দুধকথাটি হয় উড়িয়া বা বিহারী, কইসে/কইসন, জইসা, তইসে প্রভৃতি উড়িয়া, জহি তাহ,এঠু প্রভৃতি উড়িয়া ভাষারই রূপ। বিজয় মজুমদার এমনি কিছু শব্দ ধরে দেখিয়েছেন, চর্যারউপর হিন্দি ও উড়িয়া ভাষার প্রভাব বেশি।

বিজয়চন্দ্র ভাষার ব্যাকরণ না ধরে বিচ্ছিন্ন শব্দ ধরে প্রমাণে অগ্রসর হয়েছেন। নব্যভারতীয় আর্য ভাষার প্রথম স্তরের অন্তর্গত উপভাষাসমূহের রূপ মোটামুটি এক ছিল। একেঅপভ্রংশ স্তর বলা হয়। বাংলা, আসামি, উড়িয়া, মগধী, মৈথিলী ভোজপুরিয়া- এ স্তরেরঅন্তর্ভূক্ত। ফলে শুধু শব্দ নিয়ে প্রথম স্তরের যে কোন ভাষাকে অন্য ভাষা বলে দেখানোসহজ। শুধুমাত্র দু'চারটে শব্দ ধরেই হিন্দি, উড়িয়া বলা যাবে না। কারণ এদের মূল

যেহেতু সংস্কৃত, ফলে এসব শব্দের বাংলায় প্রবেশ করাও অসম্ভব নয়। ফলে বিজয়চন্দ্রমজুমদারের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় চর্যার ভাষা নিয়ে বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ বিষয়কগবেষণা গ্রন্থে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাঁর মতে চর্যাপদের ভাষা প্রাচীন বাংলা।

চর্যার ভাষার মধ্যে বাংলার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়

যেমন---সম্বন্ধ পদে এর, অর, সম্প্রদান কারকে রে, অধিকরণে তে, অতীত এবং ভবিষ্যৎ কালের হল

বা ইব, অল এবং অব বিহারী রূপ নয়, বর্তমানে ক্রিয়া নির্দেশক অন্ত, সংযোজক অব্যয়ে

ইঅ, শর্তযুক্ত সংযোজক অব্যয়ে ইলে, অকর্মক ধাতুতে ইঅ-মধ্যযুগের বাংলাতেও যার

অবশেষ বিদ্যমান। বিশেষ্যবাচক ধাতুরূপে আছ এবং থাক, মৈথিলীর থিক বা উড়িয়ার থানয়, আরও বহু সংখ্যক বাংলা প্রবচন। চর্যাপদের ভাষার ভিত্তি মূল বাংলাদেশেরই নিজস্বভাষায় ।

চর্যার ভাষা নব্য ভারতীয় স্তরের। শব্দরূপ নব্য ভারতীয় আর্য ভাষান্তর অপেক্ষা মধ্য

ভারতীয় আর্য ভাষাত্তরের বেশি নিকটবর্তী, যদিও নব্য ভারতীয় আর্য ভাষার পূর্ববর্তীঅবস্থার সাক্ষাৎ চর্যাপদে পাওয়া যায়তবে তিনি বলেছেন চর্যার ভাষার উপর শৌরসেনী অপভ্রংশের সামান্য প্রভাব আছে। তবেতিনি দৃঢ়তার সাথে চর্যাপদকে বাংলা ভাষায় রচিত বলে নির্দেশ করেছেন। ১৯২০ সালে ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত বলে অভিমত দেন। কিন্তু বিজয়চন্দ্রমজুমদার ও সুনীতিকুমারের আলোচনা প্রকাশিত হলে বাংলার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অধিবাসীচর্যাপদকে তাদের স্ব স্ব ভাষায় রচিত বলে দাবি করেন।

ড. সুকুমার সেন বলেছেন, “সুর্নীতি বাবুর ইঙ্গিত বুঝিতে না পারিয়া এবং নিজ নিজপ্রাদেশিক ভাষায় গৌরব বাড়াইতে গিয়া বাংলার প্রতিবেশীরা এখন চর্যাগীতি লইয়ারীতিমত মামলা বাধাইয়াছেন। হিন্দি ভাষী, মৈথিলী ভাষী, উড়িয়া ভাষী, আসামি ভাষী,চর্যাপদ তাদের নিজ নিজ ভাষায় রচিত বলে দাবি করছে।"ফলে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যার ভাষাবিষয়ক বিতর্ককে সাতটি শ্রেণীতে সজ্জিত করে

বিচার করেছেন।

১. চর্যার ভাষা কি খিচুড়ি ভাষা : মূলত সাতচল্লিশটি বৌদ্ধ গান বাইশ জন কবির রচনা।মধ্যে সময় ও স্থানের ব্যবধান রয়েছে। সুতরাং সকলের ভাষা যে এক রকম নয়সেটাই স্বাভাবিক। তবে এটা ঠিক যে, তাদের যে ভেদাভেদ তা প্রাচ্য ভারতীয় আর্যভাষাগোষ্ঠির নব্য ভারতীয় আর্য ভাষাভেদ। এ বিষয়েএদের ভাষার ঐক্য আছে। ফলেচর্যার ভাষা খিচুড়ি নয়। তাঁর মতে চর্যার ভাষা না বলে লুইপাদের ভাষা বা কাহ্নপার ভাষা


২. চর্যার ভাষা কি অপভ্রংশ চর্যার ভাষা অপভ্রংশ নয়, নব্য ভারতীয় আর্য ভাষার পূর্ববর্তীস্তর অপভ্রংশ। অপভ্রংশ স্তরে যুগ্ম ব্যঞ্জন নব্য ভারতীয় স্তরে একক ব্যঞ্জনে পরিণত হয়এবং সাধারণত পূর্ব স্বর দীর্ঘ হয়। যেমন- পাস, রাতি, বাকল, দাহিন, ছাড়অ, বাট প্রভৃতিশব্দের অপভ্রংশ রূপ যথাক্রমে পাস, রতি, বককল, দকখিন, ছড়ই, বটুট প্রভৃতি। চর্যায়একশ যুগ্ম বাজনে শব্দের প্রয়োগ নেই। তবে প্রাচীনত্বের কারণে, ভাষায় অপভ্রংশেরবিভক্তি সপ্তমীতে হি হি প্রভৃতি রক্ষিত। ফলে চর্যার ভাষা অপভ্রংশ নয়।

৩. চর্যার ভাষা কি হিন্দি হিন্দি (উর্দু), রাজস্থানী প্রভৃতি ভাষা নব্য ভারতীয় আর্য ভাষার

হবাগোষ্ঠির অন্তর্গত। মগধী (বিহারী) উড়িয়া, বাংলা ও আসামি প্রাচ্যগোষ্ঠির অন্তর্গত।প্রাচাগোষ্ঠির বিশিষ্ট লক্ষণ অতীতে 'ল', ভবিষ্যতে ‘ব', কর্তায় ও অধিকরণে এ বিভক্তি,বর্তমানকালে প্রথম পুরুষের বহুবচনে অস্থি (মাগধীতে অথি) প্রভৃতি। চর্যাপদের ভাষায়প্রাচ্যগোষ্ঠির সকল বিশিষ্ট লক্ষণ থাকায় তা হিন্দিতে রচিত বলা যায় না।


৪. চর্যার ভাষা কি মৈথিলী : মৈথিলী ভাষার বিশিষ্ট লক্ষণ অতীতকালে 'অল' (অন্যসহোদরা ভাষায় ইল), ভবিষ্যতে অব' (অন্য সহোদরা ভাষায় ইব), বর্তমানকালের প্রথমপুরুষে 'অথি' (অন্য সহোদরা ভাষায় অন্তি) প্রভৃতি চর্যার কবিদের মধ্যে শাস্তিপাদেরভাষায় মৈথিলী ভাষার লক্ষণ আছে, অন্য কবিদের পদে মৈথিলীর লক্ষণ নেই। ফলেশান্তিপাদ ব্যতীত অন্যদের ভাষা মৈথিলী নয়।

৫. চর্যার ভাষা কি উড়িয়া? : উড়িয়া ভাষার বিশেষ লক্ষণ হচ্ছে অধিকরণে 'রে, আছ'

ধাতুর অতীতকালে 'থিল' প্রভৃতি। আর্য দেবের ভাষা ব্যতীত অন্য কারও ভাষা উড়িয়া

ভাষায় হতে পারে না।

৬. চর্যার ভাষা কি আসামি : আসামির বিশিষ্ট লক্ষণ বহুবচনের বিভক্তি বোর, ইত, বিলাক

প্রভৃতি। তাছাড়া কর্মে 'ক', অধিকরণে 'ত' প্রভৃতি প্রাচীন বাংলা ও আসামির সাধারণ

লক্ষণ। চর্যার কোন কবির ভাষায় আসামির সাধারণ লক্ষণ দেখা যায় না। ফলে চর্যার

ভাষা আসামি নয়।

৭. চর্যার ভাষা কি বাংলা বাংলা ভাষার বিশিষ্ট লক্ষণ বহুবচনে রা বিভক্তি, ক্রিয়াপদে

অতীতকালে ইল প্রত্যয়, অধিকরণে এ বিভক্তি, করণে ও কর্তৃকারকে এ বিভক্তি এবংপ্রাচীন বাংলার রূপ লো অ ক্ষুদ্রত্ববাচক 'উলী' প্রত্যয়। বাস্তবিক চর্যার পদকর্তাদেরঅধিকাংশের অধিকাংশ পদই বাংলা ব্যাকরণসম্মত। এমনকি আর্যদেবের ভাষায়ও বাংলারপ্রভাব বেশি। তাঁর পদও বাংলা ভাষায় রচিত বলে বলা যায়।বাংলা কথাকে সাহিত্যিক রূপদানের আদি প্রয়াস আমরা চর্যায় পাই। তবে বাংলা

একেবারেই তার নিজস্বতা নিয়ে চর্যায় আসতে পায়নি। কারণ, বাংলার চেয়ে অধিকতরসমর্থ ও প্রতিষ্ঠিত পূর্ববর্তী ও সমকালীন ভাষার প্রভাব এ ভাষার অবয়বে প্রভাব বিস্তারকরেছে। সরুল বাংলা ভাষাভাষী পদকর্তাদের সামনে সমৃদ্ধিশালী সংস্কৃত, নানাবিধসাহিত্যিক প্রাকৃত, আর শৌরসেনী অপভ্রংশ ছিল। এদের মধ্যে গঠন, প্রতিপত্তিতেশৌরসেনী অত্যন্ত বর্ধিত সাহিত্যের ভাষা'। স্বাভাবিকভাবে সে ভাষা প্রাচীন বাঙলারউপর প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু সেটি বাংলাই, বিভিন্ন ভাষায় অপছায়া জড়িত কোন কৃত্রিমভাষা নয়। কারণ চর্যার ভাষার ব্যাকরণে এমন কিছু নেই যা মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগেরবাংলা ব্যাকরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা যায় না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ